ত্বকের যত্নে নিম

Share on Facebook

মুখে একটা ব্রণ হলে বা ত্বকের কোন সমস্যা হলেই আমাদের দুশ্চিন্তা শুরু হয়ে যায়। এই দুশ্চিন্তায় একটা ব্রণের জায়গায় আমরা দুই তিনটি ব্রণ বানিয়ে ফেলি। অথচ হাতের কাছেই প্রাকৃতিক উপাদান নিম পাতার ব্যবহার আমাদের এক্ষেত্রে খুব সাহায্য করতে পারে।

১. নিম পাতা ফাঙ্গাস ও ব্যাকটেরিয়া বিরোধী। তাই ত্বকের সুরক্ষায় এর জুড়ি নেই। ব্রণের সংক্রমণ হলেই নিম পাতা থেঁতো করে লাগালে ভালো ফল নিশ্চিত!

২. মাথার ত্বকে অনেকেরই চুলকানি ভাব হয়।  নিম পাতার রস মাথায় নিয়মিত লাগালে এই চুলকানি কমে, চুল শক্ত হয়, চুলের শুষ্কতা কমে যায় এবং নতুন চুল গজায়।

৩. শুধুমাত্র চুলের নয় ত্বকের চুলকানিতেও নিম পাতা বেটে লাগালে উপকার পাওয়া যায়।

৪. নিয়মিত নিম পাতার সাথে কাঁচা হলুদ পেস্ট করে লাগালে ত্বকের উজ্জলতা বৃদ্ধি ও স্কিনটোন ঠিক হয়। তবে হলুদ ব্যবহার করলে রোদ এড়িয়ে চলাই ভালো। নিম পাতার চেয়ে হলুদের পরিমাণ  কিন্তু কম হবে!

৫. নিমের তেলে প্রচুর ভিটামিন ই এবং ফ্যাটি এসিড থাকে যা ত্বক এবং চুলের জন্য উপকারী।

৬. নিমের পাতা খেলে আমাদের শরীরের আজেবাজে জিনিস ভালো হয়ে যায় মানে শরীরের পরিপাক তন্ত্রের গতি বাড়ে সেই সাথে বিষাক্ত পদার্থ দূর করে দেয় এবং রক্তের শুদ্ধতা বাড়ায়। ফলাফল হিসেবে শরীরের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়ে আপনার ত্বক পরিষ্কার থাকবে। এ জন্য নিমের পাতা ৩/৪ টি প্রতিদিন চিবিয়ে খেতে হবে। উফফ!! মুখটি কি এখনি তেতো হয়ে গেলো?? আরে সহজ সমাধান দেই!  নিমপাতা বেটে ছোট ছোট বড়ি তৈরি করে রোদে শুকাতে দিন। ভালো ভাবে শুকিয়ে গেলে কাঁচের বয়ামে সংরক্ষণ করুন। প্রতিদিন সকালে ২/৩ টি বড়ি পানি দিয়ে পেটে চালান করে দিন!

৭. নিম পাতা সেদ্ধ পানি গোসলের পানির সাথে মিশিয়ে নিন। যাদের স্কিন ইরিটেশন এবং চুলকানি আছে তাদের এতে আরাম হবে আর গায়ে দুর্গন্ধের ব্যাপারটাও কমে যাবে আশা করা যায়।

৮. নিম পাতা সেদ্ধ পানি বোতলে ভরে ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন। কোন ফেইস প্যাক পেস্ট করার সময় পানির বদলে এই নিম পানি ব্যবহার করতে পারেন।

৯. নিমের ডাল যে দাঁতের জন্য উপকারী সে কথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। মুখের দুর্গন্ধ ও দাঁতের জীবাণু রোধে এটি বেশ কার্যকরী।

১০. কাটা ছেড়া বা পোড়া স্থানে নিম পাতার রস ভেষজ ওষুধের মতো কাজ করে।

১১. নিম পাতা রোদে শুকিয়ে গুঁড়ো করে রেখে দিতে পারেন। পরবর্তীতে ফেইস মাস্ক হিসেবে ব্যবহার করার জন্য।

আসলে তিতা নিমের গুণের কথা বলে শেষ করা যাবে না। তাই আজকে আপনাদের একটা নিমের চা এর রেসিপি দিয়ে লেখা শেষ করছি। এমনিতেই ভেষজ চা অনেক উপকারী!  নিজেকে সতেজ ও সুস্থ রাখতে নিম চা এর তুলনা হয় না! যারা ইতোমধ্যে চিরতার রস খেয়ে অভ্যস্থ তাদের কাছে নিম চা দুধভাত মনে হবে। যারা নতুন তারা মধু মিশিয়ে নিতে পারেন!

নিম চাঃ

শুকনো নিম পাতা গুঁড়ো অথবা তাজা নিমের ৬/৭ টি পাতা গরম পানিতে ছেড়ে ২/৩ মিনিট জ্বাল দিয়ে মধু মিশিয়েই বানিয়ে ফেলা যায় সুমিষ্ট নিম চা , তবে নতুনদের জন্য সময়সীমা ১ মিনিট। যত বেশি জ্বাল দিবেন তত তিতা হবে।

আপনারা চাইলে একই ভাবে তুলসি পাতা দিয়েও চা বানাতে পারেন। মজার ব্যাপার হলো তুলসি পাতা অল্প সেদ্ধ করলে রঙ থাকবে সবুজ, বেশি সেদ্ধ করলে চায়ের রঙ হয়ে যাবে। যাদের সত্যিকারের সবুজ চা খাওয়ার ইচ্ছে তারা চেষ্টা করে দেখতে পারেন। আমি নিজেই ব্যক্তিগত ভাবে অনেককে এই স্পেশাল গ্রিন টি খাইয়েছি।

 

Leave a Reply