কিডনিতে পাথর দূর করার ঘরোয়া উপায়

Share on Facebook

কিডনিতে পাথর বা স্টোন হওয়া এখন পরিচিত একটি সমস্যা। প্রথম থেকেই এটি দূর করার চেষ্টা না করা হলে পরবর্তীতে তা মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে। তবে কিডনিতে পাথর হওয়া মানেই যে অপারেশনের প্রয়োজন তা কিন্তু নয়। প্রাথমিক কিছু পরীক্ষার পর স্টোনের আকার নির্ধারণ করে ঘরোয়া উপায়েই করতে পারেন এর চিকিৎসা। কিছু সহজ উপায়ে দূর করতে পারেন কিডনিতে হওয়া পাথর।

কিডনিতে পাথর কেন হয়: কিডনির ভিতরে মিনারেল জমে ক্রিস্টাল বা স্ফটিকের মতো পদার্থ তৈরি করে, একে কিডনি স্টোন বলা হয়। অর্থাৎ, ক্যালসিয়াম ও অক্সালেটের ডিপোজিশন হলে এই রোগের উৎপত্তি হয়। স্ফটিকগুলি ধীরে ধীরে জমে পাথরের আকার ধারণ করে। পাথরটি যখন বড় আকার নেয় এবং সরু মূত্রনালীর মধ্যে দিয়ে যায় তখন মূত্রনালির ভেতরে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে এবং প্রস্রাবের গতি রোধ করে দেয়, ফলে ভীষণ ব্যথার উৎপত্তি হয়। মূলত শরীরে পানির অভাবের ফলে কিডনিতে পাথর তৈরি হয়। কারণ পানির অভাবে লবণ, মিনারেলসহ ইউরিনের অন্যান্য উপাদান শুকিয়ে যায় এবং স্বাভাবিক ভারসাম্য বদলাতে শুরু করলে এই রোগ দেখা দেয়।

কিডনিতে পাথর হওয়ার লক্ষণ:* বমি বমি ভাব বা কখনো কখনো বমি হওয়া।

* তলপেটের নীচে এবং কুঁচকিতে ব্যথা হওয়া।

* পাঁজরের নীচে অসহ্য যন্ত্রণা হওয়া এবং এই ব্যথার তীব্রতা ওঠা নামা করে।

* প্রস্রাব করতে গেলে ব্যথা হওয়া এবং কালচে লাল, লাল কিংবা বাদামি রঙের প্রস্রাব হওয়া।

* বার বার প্রস্রাব পাওয়া এবং স্বাভাবিকের তুলনায় প্রস্রাব বেশি হওয়া।

ঘরোয়া উপায়ে দূর করবেন যেভাবে: শরীরে পানির পরিমাণ কমে গেলে কিডনিতে পাথর হওয়ার প্রবণতা বাড়ে। প্রচুর পানি পান করা কিডনিতে পাথর নিরাময়ে সহায়তা করতে পারে। এর পাশাপাশি আরও কিছু উপায় মেনে চললে কিডনির পাথর দূর হবে। তবে সবকিছুর আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। জেনে নিন ঘরোয়া উপায়গুলো:

পানি পান: এই অসুখ থেকে মুক্তি পেতে প্রচুর পানি পান করা জরুরি। এই পরামর্শ চিকিৎসকরাও দিয়ে থাকেন। পাথরের আকার যদি খুব ছোট হয় তবে তা পরিমাণমতো পানি পানের মাধ্যমে সারিয়ে তোলা সম্ভব।

তুলসি: তুলসিতে আছে অ্যাসিটিক অ্যাসিড। এটি কিডনির পাথরকে ভেঙে ফেলতে সাহায্য করে। পাশাপাশি, এর রসে থাকা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এজেন্ট কিডনির স্বাস্থ্যকে ঠিক রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন অন্তত ২ বার করে তুলসির রস খান। সমস্যা দূর হবে।

লেবু: লেবুর রসে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড ক্যালসিয়াম পাথর তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করে এবং ছোটো পাথরগুলোকে ভেঙে বার করে দিতেও সাহায্য করে। সকালে পানির সাথে লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।

ডালিম: অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ ডালিম খেলে তা কিডনিকে সুস্থ রাখতে এবং পাথর ও অন্যান্য টক্সিনগুলিকে দূর করতে সাহায্য করে। একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সারাদিনে কতবার এটি পান করবেন তা ঠিক করুন।

আপেল সাইডার ভিনেগার: এটি কিডনিতে হওয়া পাথর দ্রবীভূত করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি ব্যথা কমাতেও সাহায্য করে। বাজার থেকে আপেল সাইডার ভিনেগার কিনে এর সাথে ২ টেবিল চামচ পানি মিশিয়ে পান করুন। তবে, একদিনে ১৬ চামচের বেশি খাবেন না। আপনি যদি ডায়াবেটিক রোগী হন এবং ইনসুলিন নিয়ে থাকেন, তবে এটি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

কালো জিরা: কালো জিরার বীজ কিডনিতে ক্যালসিয়াম অক্সালেট কিডনির পাথর দূর করে। এককাপ গরম পানিতে আধা চা চামচ শুকনো কালো জিরা দিন। এটি দিনে দুইবার পান করুন। সমাধান মিলবে।

Leave a Reply