অতিরিক্ত কফি খেতে খেতে নিজের ক্ষতি করছেন না তো?

Share on Facebook

কফি’ দুই অক্ষরের এই ছোট্ট শব্দটির সঙ্গে আমরা সকলেই পরিচিত। অফিসের স্ন্যাক্সে হোক কিংবা সকালের ব্রেকফাস্ট অথবা বিকেলের আড্ডা এক কাপ কফি না হলে ঠিক যেন জমে না। আবার অনেকে একটানা বিরামহীন ভাবে কাজ করতে গিয়ে সারাদিনে কয়েক কাপ কফিও পান করে ফেলেন। তবে সারাদিনে প্রচুর কফি পান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

আমেরিকান ভিত্তিক একটি গবেষণা সংস্থা তাদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জার্নালে জানিয়েছে, ঘুম থেকে উঠে যদি আপনি সরাসরি কফি পান করেন তাহলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে  । শুধু তাই নয়, সারারাত শরীরে নানা রকম রাসায়নিক প্রক্রিয়া চলার কারণে পাকস্থলিতে অতিরিক্ত অ্যাসিড ক্ষরণ হয়। এই অবস্থায় খালি পেটে কফি খেলে বমির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। আবার অনেকেই রাতের খাবারের আগে কফি খেতে পছন্দ করেন কারণ এতে রাতের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। আমাদের নার্ভকে ক্ষতিগ্রস্ত করে দেয় এই ক্যাফেইন।

 এছাড়াও কাজের ফাঁকে হোক  সারাদিনে দু চার কাপ কফি অনেকেই খেয়ে ফেলেন। কিন্তু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে বলছেন সারাদিনে দু কাপের বেশি কফি খাওয়া যাবে না।সারাদিনে দু,এক কাপের বেশি কফি পান করা শরীরের পক্ষে মোটেও ভালো নয় বরং একটানা বেশি কফি পানের অভ্যাস বজায় থাকলে হতে পারে নানা শারীরিক সমস্যা, কমে যেতে পারে ঘুমের পরিমাণ, বাড়তে পারে স্ট্রেস। ফলে  কফি পানের যেমন প্রয়োজন আছে এ কথা সত্য কিন্তু যা প্রয়োজন বুঝে।

এছাড়াও কারণে অকারণে চা, কফি বা বিভিন্ন সফট ড্রিংকস খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। না হলে শরীরে মেদ যেমন বাড়বে তেমনই রোগব্যাধি বাড়বে। যত কাজের চাপই থাকুক না কেন রাতে অন্তত ৮ থেকে ৯ ঘন্টা ঘুমানের অভ্যাস করুন। সারাদিন টুকটাক কাজের ফাঁকে চা কফিতে চুমুক না দিয়ে পুষ্টিকর খাবার খান। শুধু তাই নয়, মানসিক চাপ কমাতে চা কফির বদলে ইয়োগা করতে পারেন। নিয়মিত শরীরচর্চা করুন উপকার মিলবে অনেক।
কিছু গবেষণায় দেখা গেছে ক্যাফেইন হৃদপিণ্ডের রক্তসরবরাহকরী ধমনীতে রক্ত চলাচল ধীর করে দেয়। বিশেষ করে যখন বেশি দরকার, যেমন: ব্যায়ামের সময়। তাছাড়া বুকধড়ফড়ানি, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন বা উচ্চ রক্তচাপের জন্যেও শরীরের অতিরিক্ত ক্যাফেইন দায়ী।

এক কথা অনেকেই জানেন, চা বা কফি খেলে ঘুম কম হয়। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, যারা দিনে তিন কাপের বেশি কফি পান করেন তাদের শান্তির ঘুম খুব কমই হয়। আরেক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা কফি খান না তাদের থেকে কফি পানকারীদের ৭৯ মিনিট কম ঘুম হয়। তাই ঘুমের সমস্যা থাকলে কফিকে না বলুন।
যদিও অনেকে চিনি ছাড়া কফি পান করেন। তবে কফির সঙ্গে কেক, বিস্কুট বা সকালের নাস্তার অনেক পদেই থাকে চিনি। সবমিলিয়ে দেখা যায়, সারা দিনে হয়তো ১১ টেবিল-চামচ চিনি খাওয়া হয়ে যাচ্ছে। তাই যারা ওজন কমানোর চেষ্টায় আছেন, তাদের চেষ্টা তখন বিফলে যাবে।

ক্যাফেইন শরীরের অ্যাড্রেনালিন নামক একধরনের হরমোনের মাত্রা বাড়ায়। যে কারণে শরীরের টানটান উত্তেজনা বা ঘাবড়িয়ে যাওয়ার অনুভুতির মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।

দৈনিক পাঁচ কাপের বেশি কফি খেলে গর্ভধারণের ক্ষমতা কমে যেতে পারে। যদি মা হতে চান, তবে অবশ্যই কফি খাওয়ার পরিমাণ কমাতে হবে। আর গর্ভধারেণের পর কফি বাদ দিন। কারণ দৈনিক ২০০ মি.গ্রাম ক্যাফেইন শরীরে গেলে গর্ভের শিশুর ক্ষতি হওয়ার পাশাপাশি জন্মক্রটি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

Leave a Reply