দক্ষিণ এশিয়ায় বিমানের বিচরণ বাড়াতে জোর প্রধানমন্ত্রীর

Share on Facebook

দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের যোগাযোগ বাড়ানোর উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, “আমাদের বিমানটা আন্তর্জাতিক রুটের মধ্যে চলে। যে জন্য এই জায়গাটায় আমাদের অনেক সুযোগ রয়েছে যে যাতে আন্তর্জাতিকভাবে যোগাযোগ রক্ষা করা যায়।

“সেই সঙ্গে আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলো, অর্থাৎ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগটা আরও বাড়ানো দরকার।”

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বুধবার এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।

ইতোমধ্যে বেসরকারি খাতে মালদ্বীপে ফ্লাইট চালুর বিষয়টি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্স, আমি মনে করি যে আমাদের এই দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে… সব জায়গায় কিন্তু লাভ লোকসান খতিয়ে দেখার দরকার নেই। কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করা..।”

ঢাকা ও সিলেট থেকে বিমানের কার্গো পরিবহন শুরুর কথা তুলে ধরে আন্তর্জাতিক রুটে বিমানের কার্গো পরিবহনের ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী।

“আমি চাই, আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের বিমানের নিজস্ব কার্গো প্লেন থাকবে। যেটায় পণ্য পরিবহন করলে এটা বিমানই লাভবান হবে। কাজেই অন্ততপক্ষে দুটো কার্গো বিমান ক্রয় করা একান্তভাবে জরুরি বলে আমি মনে করি।”
যথাযথভাবে উদ্যোগ নিলে কার্গো বিমান কেনা সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, “কার্গো সার্ভিস চালু থাকলেই কিন্তু বিমান আরও লাভজনক হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আমরা চাই আমাদের কার্গো হ্যান্ডলিং এবং বিমান হ্যান্ডলিং সবকিছু খুব আন্তর্জাতিক মানের হোক। যাত্রীরা যেন কষ্ট না পায়, সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে, সেটাই আমরা চাই।”

কাস্টমস সিস্টেম সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজড করার পরামর্শ দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, “মানুষ যখন বিদেশ থেকে আসে, হয়তো কিছু পণ্য ক্রয় করে, নিয়ে আসতে চায়, তারা যেন কোনো হয়রানির মধ্যে না পড়ে।

“যদি পুরো ডিজিটালাইজড হয়ে যায়, তাহলে খুব সহজে যাত্রী সেবা দেওয়া সম্ভব হবে। সেই বিষয়ে আরও সচেতন হতে হবে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রবাসীরা দেশের জন্য কাজ করে এবং প্রায় ১ কোটির কাছাকাছি মানুষ প্রবাসে রয়েছে, যারা ছুটির সময় দেশে আসে।

“সেই কথাটা বিবেচনা করে তারা যেন কোন রকম হয়রানির শিকার না হয়, সেটার দিকে আমাদের আরও যত্নবান হতে হবে। যদিও এখন সেবাটা অনেক উন্নত হয়েছে, তারপরও আরো উন্নত হোক সেটা আমরা চাই।”

নতুন কেনা উড়োজাহাজগুলো যেন সুন্দরভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়, সেই অনুরোধ জানান শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, “আমাদের সৈয়দপুর এয়ারপোর্ট আমরা আরও উন্নত মানের করে দিচ্ছি এই কারণে যেন আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলো অর্থাৎ এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলো যেমন- ভুটান, নেপাল বা ভারত তারাও যেন আমাদের সৈয়দপুর এয়াপোর্ট এবং সিলেট এয়ারপোর্ট, চট্টগ্রাম এয়ারপোর্ট তারা ব্যবহার করতে পারে। সেই সুযোগটা আমাদের সৃষ্টি করে দিতে হবে।

“তাতে যাত্রী পরিবহন বা ‍এখান থেকে যেহেতু সরাসরি বিদেশে যাচ্ছে, সেই সুবিধাটা পাওয়া যাবে। কাজেই সে বিষয়ে আরও আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সৈয়দপুরের নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে, সিলেটের নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে, আমাদের চট্টগ্রামকেও উন্নত করতে হবে। বরিশাল এয়ারপোর্টটাও চালু করা হয়েছে। সেখানকার সেবাও উন্নত করতে হবে। এটা আমাদের দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষের জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।”

সারা দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কথা তুল ধরে তিনি বলেন, “শিল্পায়ন হবে। কিন্তু মনে রাখতে হবে যে, যোগাযোগ ব্যবস্থা যত সুন্দর হয়, দ্রুত হয় বিনিয়োগকারীরা এখানে আসবে। বিনিয়োগ করবে।

“আবার আমাদের যারা জনগণ বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাস করেন, তাদেরও যোগাযোগটা ভালো হলে কর্মক্ষেত্রে কাজ আরও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তাতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রটাও আরো সুগম হবে। সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।”

অন্যদের মধ্যে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান সাজ্জাদুল হাসান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো.মোকাম্মেল হোসেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ মোস্তফা কামাল বলাকা ভবনে এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

Leave a Reply