শীতের উষ্ণতায় খেজুর গুড়

Share on Facebook

ঋতু বৈচিত্র্যময় বাংলাদেশে শীত আসে অন্যরকম এক উষ্ণতা নিয়ে। সকালের নরম রোদ পোহানো ছাড়াও পিঠা-পায়েস দিয়ে অতিথি আপ্যায়নে বাঙালীর ভোজনবিলাসী হয়ে ওঠার ঐতিহ্য হাজার বছরের। আর এসব পিঠা, পুলি, পায়েস তৈরীতে খেজুর গুড় ব্যবহারে শীতকালটা হয়ে ওঠে স্মরণীয়-বরণীয়। আর তা হবেই না বা কেন, খেজুর গুড় তো উপকারিতায় সমৃদ্ধ। গবেষকদের মতে –

-আপনি যদি প্রতিদিন খাওয়ার পর একটু গুড় খান তাহলে হজম তাড়াতাড়ি হবে। গুড় আমাদের হজমে সাহায্য করা এনজাইমের শক্তিকে বাড়িয়ে দেয়।

-শরীরে আয়রনের অভাব ঘটলে হিমগ্লোবিনের ঘাটতি হয় ফলে নানারকম সমস্যার সৃষ্টি হয়। গুড়ে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে। প্রতিদিন অল্প পরিমাণে গুড় খেলে শরীরে আয়রনের ঘাটতি কমতে পারে।

-প্রিমেনস্ট্রুয়াল সিনড্রোম বা ‌পিএমএস সমস্যায় কমবেশি প্রায় সমস্ত মহিলারা ভোগেন। প্রতিদিন নিয়ম করে অল্প পরিমাণ গুড় খেলে শরীরে হরমোনের সমতা বজায় থাকে। এছাড়া গুড় আমাদের শরীরে হ্যাপি হরমোনের বৃদ্ধি ঘটায় ও হরমোনের সমতা বজায় রাখে।

-আমাদের শরীরে কার্বোহাইডেড জাতীয় খাবার অথাৎ চিনি এনার্জি প্রদান করে। কিন্তু এই এনার্জি অনেক সময় আমাদের শরীরে রক্তে চিনির পরিমাণ বাড়িয়ে কিডনি, চোখ ও রক্তের চাপ বাড়িয়ে দেয়। গুড় খেলে এই সমস্যাটি কম হতে পারে। কারণ গুড় রক্তের সঙ্গে মিশতে কিছুটা সময় লাগে। ফলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ হঠাৎ করে বেশি কমে বা বেড়ে যেতে পারেনা। ফলে আমাদের শরীরের অন্যান্য অঙ্গগুলির ক্ষতি কম হয়।

-গুড় আমাদের শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে। ফলে সর্দি, কাশি, ভাইরাল ফিবারের হাত থেকে রক্ষা করে ও শরীর গরম রাখে।

খেজুর গুড়ের আরও ১৫ টি উপকারিতা

কোষ্ঠকাঠিন্যের যম
গুড় হজমশক্তি বাড়ায়। সেই সঙ্গে এর ভিতরে থাকা শর্করা কোষ্ঠও সাফ করে। আপনি যদি দীর্ঘ দিন কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভোগেন, তবে রোজ এক চামচ গুড় আপনাকে স্বস্তি দিতে পারে।

লিভার ভাল রাখে
গুড় লিভার থেকে যাবতীয় টক্সিন দূর করে শরীরকে সুস্থ রাখে। ফলে, শরীর থেকে টক্সিন বের করতে চাইলে রোজ এক কামড় গুড় হতে পারে আপনার সহায়!

সর্দি-কাশি তাড়ায়
গুড় সর্দি-কাশিও তাড়ায়। সর্দি হলে একটু গুড় খেয়ে দেখুন। স্বস্তি পাবেন।

রক্ত পরিষ্কার রাখে
গুড় যেহেতু লিভার থেকে টক্সিন বের করে দেয়, সেই জন্য রক্তও সাফ থাকে।

শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
গুড় কোষ্ঠ সাফ করে, রক্ত সাফ রাখে। ফলে, আপনা থেকেই শরীরের প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়ে।

শরীর সাফ রাখে
শুধু লিভারই নয়, তার পাশাপাশি অন্ত্র, ফুসফুস এবং শরীরের অভ্যন্তরের অনেক যন্ত্রই পরিষ্কার রাখে গুড়।

মেনস্ট্রুয়াল ব্যথা কমায়
যাদের মেনস্ট্রুয়েশনের (পিরিয়ড) সময় পেটে ব্যথা হয়, তারা সেই সময়ে গুড় খেয়ে দেখতে পারেন। সঙ্গে সঙ্গে স্বস্তি পাবেন!

রক্তাল্পতা রোধ করে
গুড় হিমোগ্লেবিনের সংখ্যা বাড়ায়! ফলে, রক্তাল্পতা রোধে এর বিকল্প নেই বললেই চলে!

মিনারেল ম্যাজিক
গুড় শরীরের মিনারেলের ঘাটতি পূরণ করে। ১০ গ্রাম গুড় প্রায় ১৬ মিলিগ্রাম মিনারেলের জোগান দেয়!

স্টমাক ঠাণ্ডা রাখে
গুড় সারা শরীর তো বটেই, বিশেষ করে স্টমাক ঠাণ্ডা রাখে। ফলে, কর্মক্ষমতা বাড়ে।

ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রক
গুড়ে সোডিয়াম আর পটাসিয়াম থাকে, যা ব্লাড প্রেসারের ভারসাম্য বজায় রাখে!

শ্বাসকষ্ট কমায়
গুড় যেহেতু শরীর ঠাণ্ডা রাখে, সেহেতু আপনা থেকেই শ্বাসকষ্টে স্বস্তি মেলে। অ্যাজমা, ব্রঙ্কাইটিসের মতো অসুখে রোজ গুড় খেলে উপকার পাওয়া যায়।

গাঁটের ব্যথা কমায়
গাঁটের ব্যথায় গুড় স্বস্তি এনে দেয়। এমনি-এমনি বা এক গ্লাস দুধের সঙ্গে খান দেখবেন উপকার পাচ্ছেন!

মেদ ঝরায় গুড়
গুড় শরীর থেকে টক্সিন বের করার পাশাপাশি মেদ গলাতেও সাহায্য করে। ফলে, রোজ গুড় খেলে শরীর ঝরঝরে থাকে।

ক্লান্তি নিরোধক
গুড় রক্ত পরিষ্কার করে, শ্বাসকষ্ট কমিয়ে, মেদ গলিয়ে শরীরকে ঝরঝরে রাখে। ফলে, কর্মক্ষমতা যেমন বাড়ে, তেমনই ক্লান্তিও কমে!

Leave a Reply