পর্যটন স্বাক্ষরতা ও বাংলাদেশের বাস্তবতা

Share on Facebook

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন যে, মহামারীকে কাটিয়ে উঠার জন্য পর্যটন একটি প্ল্যাটফর্ম হতে পারে। জনগণকে একত্রিত করার মাধ্যমে পর্যটনই পারে সংহতি ও আস্থা বাড়িয়ে তুলতে। তিনি এই মর্মে বিশ্বকে একটি বার্তা প্রেরণ করেছেন যে, জাতিসঙ্ঘ বিশ্ব পর্যটন সংস্থা পুনরায় পর্যটন শুরু করার মাধ্যমে টেকসই বিকাশের জন্য ২০৩০-এর এজেন্ডা এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে এবং আমাদের সমাজের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সদস্যদের সুরক্ষায় এই খাতটির অনন্য ভূমিকা পালন করবে।

উপরের কথাগুলি বাংলাদেশের শিক্ষিত, বুদ্ধিজীবি, রাজনীতিবিদ এমনকি নীতি নির্ধারক মহল এই সময়ে কতটুকু মাথায় তুলবেন তা বলা কঠিন। আবার প্রতিবাদও করবেন না। কিন্তু জাতিসংঘ মহাসচিবের বদলে আমাদের মধ্য থেকে কেউ বললে নিশ্চয়ই সমালোচনার ঝড় তুলতো। অনেকে চ্যালেঞ্জ করে জিজ্ঞেস করে বসতেন যে, মশাই করোনার এই মৃত্যুর মিছিলে আপনি পর্যটকদের ঘর থেকে বের হওয়ার কথা বলছেন, আপনার মাথায় কি কিছুই নাই? আর তালে তালে আরো কতজন এই সমালোচনায় যোগ দিতেন তার ইয়ত্তা নাই। এর প্রধান কারণ হলো আমাদের পর্যটন সাক্ষরতার ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে। পর্যটন সাক্ষর মানুষেরাই কেবল জাতিসংঘের মহাসচিবের মতো নির্ভয়ে টেকসই উন্নয়নের এই সকল সত্য ও সঠিক কথা বলতে পারেন।

পর্যটন সাক্ষরতার ধারণা:
একজন মানুষ তার পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় অবস্থান বিবেচনায় পর্যটন সম্বন্ধে যতটুকু জ্ঞান থাকা দরকার তাকেই পর্যটন সাক্ষরতা বলতে পারি। বিশ্বগ্রামে পরিণত হওয়া পৃথিবীর টেকসই উন্নয়নে ও মানুষের প্রকৃত ক্ষমতায়নে পর্যটন সাক্ষরতা অপরিহার্য। পর্যটন শিক্ষার সাথে এর মৌলিক পার্থক্য হলো, পর্যটন শিক্ষা সকলের জন্য একই স্তরের। কিন্তু পর্যটন সাক্ষরতা ব্যক্তির অবস্থান ও স্তর ভেদে নির্ধারিত হয়।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে, গন্তব্য ব্যবস্থাপনার উপর পর্যটন শিক্ষাদান ও গ্রহণে ছাত্র, শিক্ষক ও নীতি নির্ধারকদেরকে একই কারিক্যুলাম মেনে চলতে হবে। তাতে হয়তো একেক জন একেকভাবে শিখবেন। তবে এতে শিক্ষা গ্রহণে তেমন কোন হেরফের হবে না। কিন্তু সমাজের সকলের গন্তব্য ব্যবস্থাপনার উপর জ্ঞান একই স্তরের থাকলে চলবে না। ছাত্রদের এক রকম, শিক্ষকদের অন্য রকম এবং নীতি নির্ধারকের অবশ্যই তার চেয়ে উঁচু স্তরের হতে হবে। উল্লেখ্য যে, গন্তব্যকে সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনার আওতায় আনার জন্য সর্বনিম্ন স্তরে কারিগরি দক্ষতা, মধ্যমস্তরে লাগে ধারণগত দক্ষতা এবং উঁচুস্তরে লাগে মানবীয় দক্ষতা। স্তরভেদে জ্ঞান ও এই সকল দক্ষতা সৃষ্টির জন্য পর্যটন সাক্ষরতার প্রয়োজন। সাধারণ সাক্ষরতা নিচ থেকে ঊর্ধমুখী হয়। কিন্তু পর্যটন সাক্ষরতা উপর থেকে নিম্নমুখী প্রবাহিত হয়।

পর্যটন সাক্ষরতার প্রয়োজনীয়তা:
আমরা আজকাল বুঝে গেছি যে, পর্যটনের উপাদান ও জীবনের উপাদান অভিন্ন। তাই পর্যটনের উপাদানের উৎকর্ষ সাধনের মধ্য দিয়ে জীবনের উপাদানের উৎকর্ষ সাধন করা আধুনিক পর্যটনবান্ধব রাষ্ট্রের মৌলিক ভিত্তি। ফলে একটি রাষ্ট্রের সর্বস্তরে পর্যটন সাক্ষরতার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে। রাষ্ট্র পরিচালনার স্তরবিন্যাসকে বিবেচনা করলে উঁচু স্তরে সবচেয়ে বেশি, মধ্যমস্তরে মাঝারি এবং নিম্নস্তরে সবচেয়ে কম পর্যটন সাক্ষরতার প্রয়োজন। অন্য সকল বিষয়ে সম্যক ধারণা থাকা সত্বেও কেবল পর্যটন সাক্ষরতার ঘাটতির জন্য একটি রাষ্ট্র বর্তমান বিশ্বে পর্যটন কুটনীতির মাধ্যমে পর্যটন অর্থনীতি গড়ে তুলতে বিপত্তির মুখে পড়বে।

রাষ্ট্রনায়কগণের পর্যটন সাক্ষরতার প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি। একজন রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকার প্রধান পর্যটনে উত্তম সাক্ষরতা থাকলে ঐ রাষ্ট্রের অবকাঠামো, উৎপাদনশীলতা, কর্মসৃজন পরিকল্পনা, পরিবেশ রক্ষার ব্যবস্থা এমনকি আইনি কাঠামো পর্যটনবান্ধব হবে। এতে করে একটি রাষ্ট্র তার অভ্যন্তরীণ সম্পদের উত্তম ব্যবহার ও ব্যবস্থাপনা করতে পারবে। মানুষের জন্য জীবনমুখী কর্মযজ্ঞ গড়ে তোলা যাবে এবং সবশেষে সামাজিক শান্তি বজায় থাকবে। পর্যটন সাক্ষরতা রাষ্ট্র পরিচালনাকারীগণকে গণমুখী এবং উলম্ব উন্নয়নের পরিবর্তে অনুভূমিক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে। অন্যথায় রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত জনবান্ধব নাও হতে পারে।

মধ্যমস্তরের নীতি নির্ধারকগণের মধ্যে পর্যটন সাক্ষরতার ঘাটতি থাকলে গৃহিত নীতিগুলি টেকসই ও জনবান্ধব হবে না। যেমন শিক্ষানীতি, বাণিজ্যনীতি, উৎপাদনশীলতা নীতি, দক্ষতানীতি ইত্যাদি সবই হবে জটিলতাপূর্ণ, অদক্ষ ও অবাস্তবায়নযোগ্য হবে। যথাযথ নগর পরিকল্পনা, শিল্পস্থাপন পরিকল্পনা, খনিজসম্পদ, পানি, কৃষি ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনাও বাস্তবোচিত হবে না। পর্যটন সাক্ষরতা এইস্তরের জন্য ধারণাগত দক্ষতা দিয়ে পরিকল্পনা প্রণয়নে সবিশেষ কার্যকর। তাই রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় এদেরকে পর্যটন সাক্ষরতা দান করা উচিত।

নিম্নস্তরের বাস্তবায়ণকারীগণের পর্যটন সাক্ষরকার অভাব হলে কারিগরি দক্ষতার অভাবে এরা মধ্যমস্তর কর্তৃক প্রণীত নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে পারবে না। প্রতিটি ক্ষেত্রে অদক্ষতার ছাপ পরিলক্ষিত হবে। এতে সমাজের মানুষ জন্য রাষ্ট্রের নির্ধারিত সেবা ও প্রণোদনা থেকে তারা বঞ্চিত হবেন।

রাষ্ট্রের করণীয়:
রাষ্ট্রের উপর থেকে নিচের স্তর পর্যন্ত সকলকেই বাধ্যতামূলকভাবে পর্যটন সাক্ষরতার আওতায় আনা উচিত। রাষ্ট্রপ্রধান এবং সরকার প্রধান পর্যটন সাক্ষরতা অর্জনের জন্য প্রয়োজনে পর্যটন বিষয়ক উপদেষ্টা নিয়োগ দিতে পারেন। মধ্যমস্তরের জন্য পর্যটনের একাধিক বিষয়ের উপর বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পর্যটন একটি কারিগরি বিষয়, তাই আমাদের রাষ্ট্রীয় শাসন কাঠামোতে পর্যটন নামক একটি নতুন ক্যাডার সৃষ্টি করা আবশ্যক। তাহলে পর্যটনেয় শিক্ষিত তরুণরা রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে ধীরে ধীরে একটি প্রগতিশীল পর্যটন সাক্ষরতা তৈরি ও বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবে। নিম্নস্তরের কর্মীদের জন্য পর্যটনের মৌলিক বিষয়গুলি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পর্যটন সাক্ষরতা প্রদান করা দরকার।

অন্যদিকে সমাজের সাধারণ মানুষ, রাজনীতিবিদ এবং সুশীল সমাজের মানুষদেরকেও অপ্রাতিষ্ঠানিক শিখন পদ্ধতিতে পর্যটন সাক্ষরতা প্রদান করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজনে কমিউনিটিভিত্তিক সামাজিক পর্যটন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা যেতে পারে। তাহলে সমাজের সাধারণ মানুষকে প্রকৃত ও টেকসই উন্নয়নে সম্পৃক্ত করা যাবে। গ্রামের বা শহরের সাধারণ মানুষদেরকে পর্যটনে সাক্ষর না করতে পারলে পর্যটন সম্পদের ব্যবহার, সুরক্ষা এবং রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করা যাবে না। একটি বিষয় মনে রাখা অত্যন্ত জরুরি। কোন গ্রাম বা শহর যদি স্থানীয় মানুষের জন্য বাসযোগ্য না হয়, তাহলে সেটা পর্যটনের জন্যও উপযোগী নয়। তাই সর্বাগ্রে দরকার রাষ্ট্রের প্রত্যেকটি স্থানকে বাসেেযাগ্য করে তোলা। আর এইজন্য সকল মানুষের জন্য স্তরভেদে পর্যটন সাক্ষরতা বিস্তার করা জরুরি।

রাজনীতি, আমলাতন্ত্র ও পর্যটন সাক্ষরতা:
এদেশের একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে আমি মনে করি রাজনীতি এখন অসাড় কর্মকান্ড। মেধাহীন ও অযোগ্য মানুষের সমারোহ রাজনীতিতে লক্ষ্য করি। জনগন এবং রাষ্ট্রের স্বার্থ তাদের কাছে গৌণ। অনেক ক্ষেত্রে মূল্যহীনও বটে। অথচ এই রাজনীতিকেই রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিতে হয়। দলগুলিতে নেতৃত্বের বিকাশ না ঘটায় নির্বাচনে জয়লাভের পর রাষ্ট্র পরিচালনায় দক্ষতার অভাব পরিলক্ষিত হয়। ফলে তারা নির্ভর করেন আমলাতন্ত্রের উপর। কিন্তু এদেশের আমলাতন্ত্র একটি দলীয়, সুবিধাবাদি ও অদক্ষতা মোড়ানো কাঠামোতে পরিণত হয়েছে। এদের প্রধান কাজ হলো যে কোন কিছুকে সরলভাবে জটিল করে তোলা এবং বাস্তবায়নে বিলম্ব করা। এই বাস্তবতায় রাজনীতিবিদ ও আমলাতন্ত্রকে পর্যটন সাক্ষর করা এখন সবিশেষ জরুরি। অন্যথায় আমাদের রাষ্ট্রকে গতিশীল এবং প্রগতিশীল করা সত্যিই কঠিন হয়ে পড়বে। তাই নিচের পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করা দরকার:

রাজনৈতিক দলগুলির জন্য করণীয়-
ক) রাজনৈতিক দলগুলির উচিত তাদের প্রত্যেক স্তরের কমিটিতে ‘পর্যটন সম্পাদক’ নামে একটি পদ সৃষ্টি করা।
খ) দলগুলির ওয়েবসাইট, বুলেটিন এবং অন্যান্য প্রকাশনায় পর্যটন বিষয়ে প্রবন্ধ ও তথ্য প্রকাশ করা করা।
গ) দলীয় প্রধানকে পর্যটন বিষয়ে জ্ঞান অহরণ করা এবং রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে তার প্রয়োগের উপায় খুঁজে বের করা।
ঘ) পর্যটন কুটনীতি, পর্যটন অর্থনীতি, পর্যটনবান্ধব রাষ্ট্র কাঠামো সম্বন্ধে দলীয় কর্মীদেরকে প্রশিক্ষিত করা।

আমলাতন্ত্রের জন্য করণীয়-
ক) স্তরভেদে সিভিল এবং মিলিটারি সকল আমলাদেরকে পর্যটনে সাক্ষর করে তোলা।
খ) পর্যটন কুটনীতি, পর্যটন অর্থনীতি, পর্যটনবান্ধব রাষ্ট্র কাঠামো সম্বন্ধে সকল সরকারি কর্মচারিদেরকে প্রশিক্ষিত করা।
গ) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন একটি ‘পর্যটন সেল’ তৈরি করে তার মাধ্যমে পর্যটনের সাথে সম্পৃক্ত মন্ত্রণালয়গুলিকে মনিটরিং করা যাতে রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন কাঠামোতে এরা কার্যকর অবদান রাখতে পারে।
ঘ) পর্যটনভিত্তিক একটি রাজনৈতিক আমলাতন্ত্র গড়ে তোলা।

পর্যটন স্বাক্ষরতা ও বাংলাদেশের বাস্তবতা:
পর্যটন শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে না পারলে কোন দেশে পর্যটন সাক্ষরতা গড়ে তোলা কঠিন। আমাদের দেশে শিক্ষার প্রতিটি স্তরে পর্যটন শিক্ষাকে অন্তর্ভূক্ত করা উচিত। এর অভাবে সমাজে পর্যটন সাক্ষরতার সাধারণ ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। জাতি হিসেবে আমরা বেশি দূর দেখতে পারারও অন্যতম প্রধান কারণ পর্যটন সাক্ষরতার অভাব বলেই আমি মনে করি। কিন্তু এই সাক্ষরতা ব্যতীত আমরা কোনভাবেই এগিয়ে যেতে পারবো না। তাই নিচের পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করা দরকার।

ক) প্রাথমিক স্তরের শিক্ষা ব্যবস্থায় পর্যটনের একটি অধ্যায় যুক্ত শিশুমনে পর্যটনের বীজ বপন করতে হবে।
খ) মাধ্যমিক স্তরে সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাথে পর্যটনকে পাঠ্যক্রমের আওতায় আনতে হবে।
গ) উচ্চমাধ্যমিক স্তরে কৃষিশিক্ষা ও অর্থনীতির মতো ইতোমধ্যে যুক্ত ‘ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি’ বিষয়কে সকল গ্রæপের জন্য উন্মুক্ত ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে চালু করতে হবে।
ঘ) উচ্চশিক্ষায় সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যটন বিষয়টি চালু করতে হবে এবং বাস্তবোচিত কারিক্যুলাম প্রণয়ন করতে হবে।
ঙ) শিক্ষক প্রশিক্ষণের জন্য প্রয়োজনে বিশেষায়িত পর্যটন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তুলতে হবে। উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে পাঠিয়েও প্রশিক্ষিত করা যেতে পারে।
চ) পর্যটনের উদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারী ও কর্মীদেরকে প্রশিক্ষিত করার জন্য সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় জাতীয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা দরকার। উল্লেখ্য, বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ফুড এন্ড বেভারেজ ইত্যাদি জাতীয় কোর্স পরিচালনা থেকে বিরত থাকতে হবে।
ছ) জাতীয় দক্ষতায় পর্যটনকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

উপসংহার:
কোন জাতির পর্যটন সাক্ষরতার পর্যায় বিবেচনা করে হয়তো একসময় কোন জাতির শিক্ষার মাপকাঠি নির্ধারণ করা হবে। তাই আজ সময় এসেছে আমাদের সীমাবদ্ধতাগুলিকে অনুধাবন করে সেসব সংশোধন করার। জাতিসঙ্ঘ বিশ্ব পর্যটন সংস্থার গ্লোবাল ট্যুরিজম ক্রাইসিস কমিটি করোনা মহামারীর অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং অর্থনীতিতে সহায়তার জন্য পর্যটনের সকল খাতকে এক করে কতিপয় সুপারিশ তৈরি করেছে। এর প্রেক্ষিতে তারা পর্যটন পুনরায় চালু করার পক্ষে জোর মত দিয়েছে। তারা বলেছে, এই সিদ্ধান্ত নতুন এবং টেকসই। এগুলি অবশ্যই পর্যটনের ছোট ছোট খাতকে বাঁচিয়ে রাখবে এবং সামগ্রিক পর্যটন একটি ভিন্ন শক্তি নিয়ে আবির্ভূত হবে। আমরা এই নতুন পর্যটনকে গড়ে তুলতে চাই। পর্যটনের এই জাতীয় আন্তর্জাতিক দিকনির্দেশনা এবং সিদ্ধান্তসমূহ বুঝে ত্বরিৎ বাস্তবায়নের জন্য আমাদের পর্যটন সাক্ষরতা অর্জন করার কোন বিকল্প নাই। রাষ্ট্র পরিচালনায় যাঁরা আছেন, তাঁরা তো বটেই রাষ্ট্রের কাঠামোর যে কোন স্থানে থেকে উন্নয়ন পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের সাথে জড়িত সকলকেই আজ পর্যটন সাক্ষরতার আওতায় আনতে হবে। একইভাবে রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবি, বিজ্ঞানী এবং সাধারণ মানুষ সকলকেই স্তরভেদে পর্যটনে সাক্ষর করতে হবে। অন্যথায় আমরা টেকসই উন্নয়নের প্রকৃত পথ খুঁজে পেতে আমাদেরকে আরো অনেক সময় ব্যয় করতে হবে।

 

মোখলেছুর রহমান
আহবায়ক, সম্মিলিত পর্যটন জোট এবং সভাপতি, বাংলাদেশ ট্যুরিজম ফাউন্ডেশন।

Leave a Reply