পর্যটনের উপখাত চিহ্নিত করে সম্মিলিত পর্যটন জোটের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি

Share on Facebook

গত ১৪ জুন ২০২০ তারিখে নিচের পত্রটি বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর মহোদয় বরাবরে প্রেরণ করা হয়। এতে পর্যটনখাতে ১০টি উপখাত চিহ্নিত করে তার অধীন ১২৫টি ক্ষেত্রে পর্যটনে এসএমই ঋণদানের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে।

জনাব,
আপনি নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে, গত ৯ জুন ২০২০ তারিখে সম্মিলিত পর্যটন জোটের সাথে আপনাদের ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক জনাব আবু ফারাহ মো. নাসের-এর ‘পর্যটন সহায়ক ব্যাংকিং ব্যবস্থা প্রবর্তন’শীষক একটি অনলাইন সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব জাবেদ আহমেদ প্রধান অতিথি হিসেবে এবং জনাব পারভেজ শাহরিয়ার, অর্থনীতিবিদ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সভায় আটাব ও টোয়াবের নেতৃবৃন্দও আলোচনায় অংশ নেন। উক্ত সভায় আলোচনা ও সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ‘ট্যুরিজম এসএমই খাতে ঋণ প্রদানের গাইডলাইন প্রস্তুতি-র জন্য আলোচ্য প্রস্তাবনা বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড ও বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আপনাদের বরাবরে প্রেরণ করা হলো।
আপনাদেরকে সর্বাগ্রে ধন্যবাদ জানাতে চাই এইজন্য যে, বাংলাদেশ ট্যুরিজম ফাউন্ডেশনের এক পত্রের প্রেক্ষিতে আপনারা পত্র নং: এসিএসপিডি/শিল্প/এসএমই/২০০৯/৩০২০ তারিখ: ০২.১১.২০০৯-এর মাধ্যমে পর্যটনকে সর্বপ্রথম এসএমইভূক্ত করেন এবং পুনঃঅর্থায়নের আওতায় আনেন। অতপর ০৫.০৯.২০১৯ তারিখে পর্যটন খাতকে সেবাখাতের আওতাভূক্ত করেন এবং ২৪টি অগ্রাধিকার খাতের মধ্যে পর্যটনকে ৫ম স্থানে রাখেন। কিন্তু পর্যটনের উপখাত এবং এর আওতাধীন বাণিজ্যিক কর্মকান্ডগুলি সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত না করার জন্য পর্যটন প্রতিষ্ঠানগুলি ব্যাংকের ঋণ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
আপনাদের সদয় অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, পর্যটন এখন পৃথিবীর ৩য় বৃহত্তম শিল্পখাত। বাংলাদেশেও এর অবস্থান পিছনে নয়। ২০১৯ সালে পর্যটন আমাদের জিডিপিতে ৪.৪% অর্থাৎ ৭৭ হাজার ৩০০ কোটির অবদান রেখেছে, ৪০ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে এবং মোট অর্থনীতির ৩%-এর অংশীদারিত্ব সৃষ্টি করেছে। একই বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালে পর্যটন রপ্তানি থেকে ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকার সমমূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়।
পর্যটনের অধীন রয়েছে অনেক উপখাত। তবে এইসব উপখাতের সংখ্যা সময়ের সাথে সাথে এবং মানুষের চাহিদার প্রেক্ষিতে বাড়তে থাকে। তাই ভবিষ্যতে সময়ে সময়ে পর্যালোচনা সাপেক্ষে এদেরকে নতুন করে যুক্ত করতে হবে। আমি মনে করি, প্রতি ২ বছর অন্তর খাত পর্যালোচনা করে হালনাগাদ করা উচিত। তাতে ব্যাংকগুলি পর্যটনে ঋণ ও অগ্রিম প্রদানে সহজ ও কার্যকরভাবে অংশগ্রহণ করতে পারবে।

উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে পর্যটন এসএমই খাতে ঋণ ও অগ্রিম প্রদানের জন্য আমাদের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিচের ১০ (দশ)টি উপখাতের অধীন শতাধিক বাণিজ্যিক পর্যটন কর্মকান্ড চিহ্নিত করা হলো। আশা করি, এই তালিকা ট্যুরিজম এসএমই খাতে ঋণ প্রদানের গাইডলাইন প্রস্তুতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। উল্লেখ্য যে, এই গাইডলাইন প্রস্তুতি এবং পূনর্মূল্যায়ন কার্যক্রমে আমাদেরকে যুক্ত করলে পর্যটনবান্ধব ও প্রায়েগিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে আমরা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবো।
আমাদের দেশের জন্য নির্ণীত পর্যটনের ১০ (দশ)টি উপখাত:
উপখাত ১: পর্যটন আবাসন
উপখাত ২: পর্যটন পরিবহণ
উপখাত ৩: খাদ্য ও খাবার
উপখাত ৪: বিনোদন
উপখাত ৫: বিশেষায়িত পর্যটন কার্যক্রম
উপখাত ৬: মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান
উপখাত ৭: পর্যটন শিক্ষা
উপখাত ৮: পর্যটন প্রযুক্তি
উপখাত ৯: পর্যটন প্রকাশনা
উপখাত ১০: বিবিধ

উপখাসমূহের বিবরণ, বাণিজ্যিক কর্মকান্ড ও ঋণের প্রস্তাবনা:
উপখাত ১: পর্যটন আবাসন – পৃথিবীতে কতধরণের পর্যটন আবাসন আছে তা সঠিকভাবে বলা কঠিন। বিশেষত প্রত্যেক জাতিগোষ্ঠীর নিজস্ব ও চিরায়ত আবাসন পর্যটকরা বেশ পছন্দ করেন। তবে বাণিজ্যিক আবাসনের উচ্চ গুরুত্ব রয়েছে পর্যটনে। আমাদের দেশে এই উপখাতের অধীন যে সকল বাণিজ্যিক আবাসন রয়েছে তাদের জন্য ফার্নিচার, ইক্যুইপমেন্ট এন্ড মেশিনারিজের জন্য লোন এবং পরিচালনার জন্য ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল প্রদান করা যায়। নিচে বাংলাদেশের নানাধরণের পর্যটন আবাসনের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হলো।

ক. হোটেল: সাধারণত অর্থের বিনিময়ে বাণিজ্যিকভাবে স্বল্পকালীন অবস্থানের আবাসকে হোটেল বলে। হোটেলে খাবারের রেস্টুরেন্ট থাকতেও পারে, নাও থাকতে পারে। সেবার ধরণের ভিত্তিতে বহুশ্রেণির হোটেল আছে। আমাদের দেশে সাধারণত বাজেট হোটেল, বুটিক হোটেল, বিজনেস হোটেল, লাক্সারি হোটেল (৫-তারকা হোটেল, ৪-তারকা হোটেল, ৩-তারকা হোটেল), ২-তারকা হোটেল, নন-স্টার হোটেল, স্ট্যান্ডার্ড হোটেল ইত্যাদি দেখতে পাওয়া যায়।
খ. মোটেল: যে সকল স্বল্পব্যয়ের হোটেলে মোটরযান পার্কিংয়ের ব্যবস্থা আছে এবং মোটর রোডের পাশেই যাদের অবস্থান। চা, কফি এবং সীমিত মেনুর খাবার পাওয়া যায় এই ধরণের হোটেলে।
গ. বোটেল (Boatel): বোট বা জলযানের উপর নির্মিত হোটেলকে বোটেল বলে। বোটেল শব্দটি নৌকা এবং হোটেলের একটি সংযুক্তিমূলক অবয়ব। বোটেলগুলি ছোট বা বৃহৎ উদ্দেশ্যে নির্মিত। এই ধরণের পর্যটন আবাসন রূপান্তরিত নৌকা থেকে রূপান্তরিত জাহাজ পর্যন্ত হতে পারে। এগুলি স্নিগ্ধ, ভাসমান ও অতিথিদের নৌভ্রমণের বিশেষ আকর্ষণ।
ঘ. গেস্ট হাউজ: একধরণের প্রাইভেট বাসস্থান যেখানে পর্যটকরা কমখরচে থাকতে পারেন। প্রাইভেট বিধায় এর আকার, আয়তন এবং সেবার মান এতটা উঁচু পর্যায়ের হয়ে না।
ঙ. হোস্টেল: বাজেট ট্রাভেলার ও ব্যাকপেকারদের জন্য কম খরচের বাসস্থান। এইধরণের আবাসনে সাধারণত একই কক্ষে একাধিক পর্যটক রাত্রিযাপন করেন এবং বাথরুম ও কিচেন ভাগাভাগি করে ব্যবহার করেন। ডরমিটারিও এক ধরণের হোস্টেল।
চ. ইন: একধরণের ছোট স্থাপনা যেখানে হঠাৎ চলে আসা পর্যটকদেরকে রাত্রিযাপন, খাদ্য ও পানীয় পরিবেশনা করা হয়।
ছ. কটেজ: একধরণের ছোট ভ্যাকেশন হাউজ যেখানে পর্যটকরা সপরিবারে আবাসন ও কিচেন সুবিধা ভোগ করতে পারেন। সাধারণত শহরের বাইরে কটেজ স্থাপন করা হয়।
জ. এপার্টমেন্ট হোটেল: শহরে আগত পর্যটকরা রাত্রিযাপনকালে নিজেরা রান্না করতে পারেন, নিজেদের কাপড় কাঁচতে পারেন এমন সুবিধাদি নিয়ে এপার্টমেন্ট হোটেল তৈরি হয়। সাধারণত একটি ফ্ল্যাটকে একটি ইউনিট ধরে হোটেল হিসেবে পর্যটকদের কাছে দৈনিকভিত্তিতে ভাড়া দেওয়া হয়। কম ব্যয়ে দীর্ঘ সময় থাকার জন্য এইধরণের হোটেল ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। পর্যটকরা এইধরণের হোটেলে নিজেদের বাড়ির মতো বাস করেন।
ঝ. স্টুডিও এপার্টমেন্ট: এটিও একধরণের এপার্টমেন্ট হোটেল। তবে এই হোটেল বসবাসের সব সুবিধাসহ খুব ১-২ রুমের ছোট এপার্টমেন্ট।
ঞ. রিসোর্ট: বিশ্রাম ও বিনোদনের জন্য ভ্যাকেশন কাটানোর উত্তম স্থান রিসোর্ট। এটি নিবিড় পূর্ণসেবা আবাসন যেখানে যথেষ্ট বিনোদন সুবিধাসহ সীমিত চিকিৎসা সেবারও ব্যবস্থা থাকে।
ট. বেড এন্ড ব্রেডফাস্ট: অতিথি এবং সেবাদানকারীদের মধ্যে একটি চমৎকার সম্পর্ক তৈরি হয় অর্থের বিনিময়ে রাত্রিযাপন ও সকালের নাস্তা পরিবেশনের মধ্য দিয়ে। এই ধরণের আবাসন ছোট হয়। তবে এর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলো ১-২ রাতের অতিথিরা মনোরম আতিথেয়তা লাভ করেন।
ঠ. ভিলা: দেশীয় বিলাসবহুল আবাসন হলো ভিলা। এই ধরণের পর্যটন আবাসন প্রথমে রোম শুরু হয়।
ড. সেনিটারিয়াম: হোটেল ও হসপিটালের সমন্বয়ে তৈরি একধরণের বিশেষ আবাসন ব্যবস্থার নাম সেনিটারিয়াম। সাধারণত সিনিয়র সিটিজেনরা দীর্ঘ সময় বিশ্রাম, বিনোদন ও হেলথ কেয়ারের জন্য এই ধরণের আবাসন ব্যবহার করেন। যুক্তরাষ্ট্রে সেনিটারিয়াম বেশ জনপ্রিয়।
ঢ. বাংলো (Bungalow): এটি একধরণের ছোট কুটির বা একতলা ছোট্ট বাড়ি যার প্রশস্ত বারান্দা এবং বেশ খোলামেলা পরিবেশ রয়েছে। বাংলোর বিশ^জুড়ে জনপ্রিয়তা বেশ জনপ্রিয়তা পরিলক্ষিত হয়।
ন. মেনশন (Mension): এইধরণের আবাসনগুলি বেশ বড় আকারের হয় যা সমৃদ্ধ ও ধনাঢ্য ব্যক্তিবর্গের জন্য তৈরি করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক স্থাপত্যশৈলীতে এইধরণের পর্যটন আবাসন স্থাপন করা হয়।
ত. ট্রি হাউজ: সাধারনত পর্যটকদের বিনোদনের উদ্দেশ্যে আকৃষ্ট করার জন্য গাছের উপর ঘর নির্মাণ করে রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা করা হয়। বড় ও পুরাতন বৃক্ষকে এই কাজে ব্যবহার করা হয়।
থ. পেন্টহাউজ (Penthouse): পর্যটকদের জন্য কোন উঁচু ভবনের সর্বোচ্চ ফ্লোরে নির্মিত বিলাসবহুল এপার্টমেন্ট যেখানে সকল প্রকার সেবা ও সুবিধাদি বহাল থাকে, তাকে পেন্টহাউজ বলে। এটি আধুনিক নাগরিক অন্যতম পর্যটন স্থাপনা।
দ. হোমস্টে: কোন বাড়িতে আন্তরিকতাপূর্ণ সেবা ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের আশা নিয়ে বাড়ির অতিরিক্ত একটি কক্ষে মূল্যের বিনিময়ে পর্যটকদেরকে রাত্রিযাপনের ব্যবস্থাই হোমস্টে। পারিবারিক পরিমন্ডলে রাত্রিযাপন করে পর্যটকরা স্বাগত পরিবারের ঐতিহ্য, কৃষ্টি, খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি জানতে পারেন। এমনকি ভিন্ন ভাষাভাষি হলে কিছু নতুন কথাও শিখে নিতে পারেন হোস্ট পরিবারের কাছ থেকে। সম্পূর্ণ ঘরোয়া সুবিধাদি দ্বারা পরিচালিত এই আবাসনে অনেক সময় বাথরুম ভাগ করে ব্যবহার করতে হয় এবং একই টেবিলে বসে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে খেতে হয়। হোমস্টেতে সামাজিক উপভোগ্যতা বাড়ায় এবং নিবিড় সাংস্কৃতিক বিনিময় ঘটে।
ধ. তাঁবু: তাঁবু হলো বাইরে নির্মিতব্য বহনযোগ্য একটি আবাসন ব্যবস্থা যা ফেব্রিকস দিয়ে তৈরি যা ফ্রেম ও খুঁটি দ্বারা সমর্থিত। যেখানে রাত্রিযাপনের স্থায়ী ব্যবস্থা নাই সেখানে সাময়িকভাবে তাঁবু নির্মাণ করা হয়। তবে আজকাল শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বিলাসবহুল তাঁবু পাওয়া যায় যেগুলি পর্যটনের জন্য বহুল ব্যবহৃত হচ্ছে।
ণ. টাইম শেয়ার: এটি একধরণের অবকাশ সম্পত্তি যেমন হোটেলের কক্ষ, রিসোর্ট বা অন্য কোন স্থাবর সম্পত্তি যা বছরের নির্দিষ্ট সময়ের জন্য মালিকানা ক্রয় করা হয়। ক্রয়কৃত টাইম শেয়ার মালিকানাকালীন সময়ের মধ্যে পর্যটকদের কাছে ভাড়া দেওয়া যায়। অর্থাৎ এর একটি বাণিজ্যিক ব্যবহার আছে। উদাহরণ: ধরি, কখগ নামক একটি হোটেলের ৩২৬ নম্বর কক্ষটি জনাব আবদুর রহিম জানুয়ারি মাসের জন্য টাইম শেয়ার ক্রয় করলেন। এর অর্থ তিনি প্রতি বছর জানুয়ারি মাসে এর মালিকানা লাভ করবেন এবং এই সময়ে তিনি উক্ত সম্পত্তি নিজে ভোগ করতে পারবেন কিংবা পর্যটকদের কাছে ভাড়া দিতে পারবেন।
প. হলিডে হোম: ব্যক্তিগত মালিকানাধীন বাড়ি পর্যটকদের অবকাশ কাটানোর জন্য ব্যবহৃত হলে তাকে হলিডে হোম বলে। এই জাতীয় আবাসনের আকর্ষণ হলো প্রতিটি বাড়ির আলাদা নির্মাণশৈলী। সমতলের বাড়ি ও পাহাড়ি এলাকার বাড়িগুলির নির্মাণশৈলী ও সুবিধাদি ভিন্ন রকমের হয়। নিজ বাড়ির মতো কিন্তু ভিন্ন স্বাদে অবকাশ কাটানোর জন্য পর্যটকরা হলিডে হোম বেছে নেন। এই বাড়িগুলি সাধারণ বাড়ি থেকে ভিন্ন ও বিলাসবহুল হতে পারে।
ফ. লজ (Lodge): লজ শব্দটির অর্থ বহুবিধ। তার মধ্যে একটি অর্থ হলো ছোট্ট গ্রামীণ বাড়ি যেখানে পর্যটকরা ছুটি কাটাতে যেতে পারেন এবং মৌসুমী খেলাধুলা ও অন্যান্য উৎসব উপভোগ করতে পারেন। আমাদের দেশে গ্রামীণ পরিবেশে শীতের পিঠা পুলি খাওয়া, ধান কাটা ও মাড়ানো দেখা এবং গ্রামে বসে গ্রীষ্মের ফল খাওয়া ইত্যাদির জন্য লজ তৈরি ও ব্যবহার করা যেতে পারে।
ব. ফার্মহাউজ: কৃষি খামার, মৎস্য খামার, ফল বাগান ইত্যাদির সাথে সংযুক্ত পর্যটন আবাসনই ফার্মহাউজ। এই আবাসনের নির্মাণশৈলী সাধারণ বাড়ি-ঘরের চেয়ে আলাদা এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্থানীয় নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হয়। তাই পর্যটকদের কাছে বেশ প্রিয়। পর্যটকরা ফার্মহাউজে থেকে খামারে কার্যক্রম অবলোকন করেন, খামারে উৎপাদিত পণ্য ভোগ করেন এবং ফিরে যাওয়ার সময় ক্রয় করেন। অনেকে সপরিবারে ফার্মহাউজে অবকাশ কাটাতে পছন্দ করেন।
ভ. দেশজ চিরায়ত আবাসন: আমাদের দেশে নানাধরণের চিরায়ত ক্ষুদ্রায়তন পর্যটন আবাসন রয়েছে। যেমন মাটির একতলা ও দোতলা ঘর, কুঁড়েঘর, বাঁশ / বাঁশের কঞ্চি ও মাটি দিয়ে নির্মিত বেড়ার ঘর ইত্যাদি। পর্যটকদের চাহিদা মাফিক এই ধরণের আবাসনকে পর্যটন আবাসন হিসেবে যুক্ত করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।

উপখাত ২: পর্যটন পরিবহণ – সব পর্যটকরা কম খরচে আরামদায়ক পরিবহণ বেছে নিতে চান। স্থানীয় চিরায়ত পরিবহণসহ নিচে আমাদের দেশের যান ও পরিবহণের উল্লেখ করা হলো। এই উপখাতের অধীন বাণিজ্যিকভাবে পরিচালিত পর্যটন যান ক্রয় বা লিজে গ্রহণের জন্য লোন প্রদান করা যায়।
ক. সড়কযান: সাইক্লিষ্টদের ভাড়ায় প্রদানের জন্য সাইকেল, মোটরবাইক ট্যুরিজমে বাইকারদেরকে ভাড়ায় প্রদানের জন্য বাইক, পর্যটকবাহী বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, কোস্টার, কার, জিপ ইত্যাদি ক্রয় ও রেন্ট-এ-কার সেবা।
খ. নৌযান: রাত্রিযাপনের সুবিধাসম্বলিত নৌকা, বাইচের নৌকা, হাউজবোট, কায়াক, ট্রলার, স্পিডবোট, ইঞ্জিনবোট, হোভারক্রাফট, ওয়াটারবাস, লঞ্চ, ক্রুজবোট ও অন্যান্য রিভার ভেসেল ও সমুদ্রগামী জাহাজ ইত্যাদি নির্মাণ ও ক্রয়।
গ. রেলযান: রেলকোচ আমদানি, ক্রয় ও লিজিং, রেল পর্যটন সেবা ইত্যাদি প্রবর্তন।
ঘ. আকাশযান: হট এয়ার বেলুন, হেলিকপ্টার, এয়ারবাস ইত্যাদি ক্রয় / লিজিং।
ঙ. অন্যান্য পর্যটনযান: রিক্সা, অটোরিক্সা, ভ্যান, গরুর গাড়ি, ঘোড়ার গাড়ি, মহিষের গাড়ি, পালকি, ডিঙি নৌকা, পানসী নৌকা, বজ্রা (রাজা, জমিদারদের ব্যবহৃত বিলাসবহুল তরী) ইত্যাদি নির্মাণ ও ক্রয়।

উপখাত ৩: খাদ্য ও খাবার (Food and Meal) – পৃথিবীর সকল পর্যটকদের মৌলিক চাহিদা হলো দেখে ও খেয়ে তৃপ্ত হওয়া এবং অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করা। বিশেষত গন্তব্যের স্থানীয় ও ঐতিহ্যবাহী খাবার পর্যটকদের জন্য বড় আকর্ষণ। তাই অনেক পর্যটক খাবার গ্রহণের পর রেসিপি ও শেফের অনুসন্ধান করেন। এই উপখাতের অধীন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলির কর্মকান্ডের জন্য ফার্নিচার, ইক্যুইপমেন্ট এন্ড মেশিনারিজের জন্য লোন এবং কাঁচামাল ক্রয় ও পরিচালনার জন্য ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল প্রদান করা যায়। নিচে নানাধরণের খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ও তাদের প্রস্তুতকৃত খাবারের তথ্য উপস্থাপন করা হলো।
ক. রেস্টুরেন্ট: যেখানে সব ধরণের খাবার ও পানীয় প্রস্তুত ও পরিবেশন করা হয়। দেশীয়, চাইনিজ, জাপানি, কোরিয়ান ইত্যাদি নানাধণের খাবার পাওয়া যায়।
খ. ফাস্টফুড রেস্টুরেন্ট: এইসব রেস্টুরেন্টে ফাস্টফুড তৈরি, পরিবেশন ও ঞধশব অধিু সেবা প্রদান করা হয়।
গ. ক্যাটারিং সেবা: যারা খাদ্যবস্তু ক্রয় করে গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী খাবার প্রস্তুত করে এবং পরিবেশন করে।
ঘ. বেকারি: এরা বেকিং ফুড প্রস্তুত ও বিক্রয় করে।
ঙ. কফি সপ: এরা বিভিন্ন ধরণের ক্যাপাচিনো হট কফি, কোল্ড ব্রæ কফি, মসলাদার (ঝধাড়ঁৎু) কফি ইত্যাদিসহ যে কোন প্রকার কফি প্রস্তুত ও বিক্রয় করে।
চ. জুসবার: এখানে নানাধরণের ফল, সবজি, দুধ, চা, আখ ইত্যাদি দ্বারা জুস তৈরি করে।
ছ. হোমমেড ফুড: এরা নিজগৃহে বিভিন্ন বেকিং ফুড, কেক, প্যাকেট খাবার ইত্যাদি তৈরি করে পাইকারি ও খুচরা সরবরাহ করে।
জ. ফুড প্রসেসিং: বিভিন্ন প্রকার খাদ্যোপাদান দিয়ে প্রক্রিয়াজাতকরণ খাবার যেমন জ্যাম, জেলি, আচার, নানা ধরণের মধু যেমন জিনজার হানি, Sliming Honey, করোনা প্রতিরোধী মধু ইত্যাদি প্রস্তুত করে।
ঝ. স্ট্রিট ফুড: এরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে খাবার প্রস্তুত, পরিবেশন ও Take away সেবা প্রদান করে।

উপখাত ৪: বিনোদন – এই উপখাতের অধীন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলির কর্মকান্ডের জন্য ফার্নিচার, ইকুপমেন্ট এন্ড মেশিনারিজের জন্য লোন এবং পরিচালনার জন্য ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল প্রদান করা যায়।
ক. পার্ক: থিমপার্ক, এমিউজমেন্ট পার্ক, শিশুপার্ক, স্পোর্টস্পার্ক, সাফারিপার্ক, বাটারফ্লাই পার্ক, হেরিটেজপার্ক, ওয়াটারপার্ক, পাখিশালা (Aviary) ইত্যাদি।
খ. শিক্ষা ও বিনোদন: পর্যটন বিষয়ক ডকুমেন্টারি ফিল্ম, সর্টফিল্ম, ফিচারফিল্ম ও পূর্ণদৈর্ঘ ছবি নির্মাণ, সিনেমা ও থিয়েটার হল, নাট্যকেন্দ্র, নৃত্যকেন্দ্র, চিত্রকলাকেন্দ্র, জাদুঘর, চিড়িয়াখানা, অগমেন্টেড ও ভার্চুয়াল রিয়েলিটি শো হল ইত্যাদি স্থাপন।
গ. গেমস: গেমিং ইনস্ট্রুমেন্টস্, কোলাবোরেশন থিমড গেমস্, এস্কেপ রুম (Escape room) ইত্যাদি।
ঘ. এক্সস্পোর্টস্ (X-Sports): প্যারাসেলিং, Paragliding, স্কাই ডাইভিং, কায়াকিং, স্পোর্টস্/গেমস্ রাইডস্, রোপওয়ে, SCUBA (Self-Contained Underwater Breathing Apparatus) ডাইভিং ও ডুবসাঁতার (Snorkeling) ইত্যাদির প্রয়োজনীয় ইনস্ট্রুমেন্টস্।
ঙ. বিবিধ বিনোদন: একুইরিয়াম, কৃত্রিম চিড়িয়াখানা, বিভিন্ন ধরনের রাইডস্ ইত্যাদি।

উপখাত ৫: বিশেষায়িত পর্যটন কার্যক্রম – এই উপখাত আমাদের দেশের জন্য অত্যন্ত প্রতিশ্রæতিশীল। তরুণদের সম্পৃক্ততায় এই উপখাতটি অনেক বেশি সৃজনশীলতা প্রমাণ দিতে পারে। এর অধীন নির্মিত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও তাদের কর্মকান্ডের জন্য পল্লী প্রকল্পঋণ, ফার্নিচার, ইক্যুইপমেন্ট এন্ড মেশিনারিজের জন্য লোন এবং পরিচালনার জন্য ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল প্রদান করা যায়।
ক. পর্যটন গ্রাম: একটি গ্রামের সকল দৃশ্যমান ও অদৃশ্য সম্পদ কাজে লাগিয়ে একে পর্যটন গন্তব্যে রূপান্তরের মাধ্যমে পর্যটকদের সেবাদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। পর্যটন গ্রামে সাধারণ কমিউনিটিভিত্তিক পর্যটন গড়ে উঠে এবং সকল মানুষ সেবাদানকারী হিসেবে সম্পৃক্ত হয়। এতে করে গ্রামের মোট উৎপাদন বাড়ে এবং দরিদ্র মানুষের স্থানীয়ভাবে কর্মসংস্থাপন হয়। পর্যটন গ্রাম পাশর্^বর্তী ভারতসহ পৃথিবীর বহুদেশে সফলতার সাথে পরিচালিত হচ্ছে।
খ. ট্যুরিজম অর্চার্ড: এমন একধরণের ফল বাগান যেখানে পর্যটনকরা নির্দিষ্ট মূল্য পরিশোধ করে প্রবেশ করেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ইচ্ছেমতো ফল ভক্ষণ করেন এবং ফল বাগানের অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেন। তবে কোন ফল সাথে করে নিতে পারেন না। তবে চাইলে ক্রয় করতে পারেন।
গ. হেলথ ক্লাব: মিনি জিমনেশিয়াম, স্পা, মাসাজ, সওনা, হট ওয়াটার বাথ ইত্যাদি।
ঘ. আয়ুর্বেদিক ওয়েলনেস কেন্দ্র: আয়ুর্বেদ আমাদের ৫ হাজারের বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং জীবনশৈলী। আয়ুর্বেদিক মতে বডি টাইপ নির্ণয়, আয়ুর্বেদিক পালস রিডিং, আয়ুর্বেদিক রেসিপি, পঞ্চকর্ম ইত্যাদির মাধ্যমে মানুষের সুস্থতা ধরে রাখার জন্য ওয়েলনেস কেন্দ্র এবং ইয়োগা কেন্দ্র স্থাপন করা যায়।
ঙ. আকুপ্রেসার ও মাসাজ কেন্দ্র: প্রাচীন ভারত ও চীন থেকে জন্মলাভ করেছে আকুপ্রেসার পদ্ধতির। মানুষের শরীরে এমন ৩৬১টি বিন্দু আছে। এদের নির্দিষ্ট বিন্দুতে ১ মিনিট করে চাপ দিলে শত শত রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা ঔষধবিহীন এই চিকিৎসা পদ্ধতিকে স্বীকৃতি দিয়েছে। বাংলাদেশে অনেকে এই পদ্ধতিতে চিকিৎসা করে থাকেন। পর্যটকদের জন্য ভ্রমণকালীন সময়ে এই ধরণের সংক্ষিপ্ত চিকিৎসা গ্রহণ নতুনত্ব সৃষ্টি করবে। পৃথিবীর অনেক দেশে আকুপ্রেসার ও মাসাজ কেন্দ্র রয়েছে। আমাদের দেশেও এর বিস্তারকে সহযোগিতা প্রদান করা দরকার।
চ. ভেষজ উদ্ভিদের জার্মপ্লাজম কেন্দ্র: গাছের ফল, ফুল, বাকল, মূল, পাতা ও বীজ এই ৬টি উপাদান দিয়ে লোকজ চিকিৎসা এবং বুনো উদ্ভিদের খাবারে ব্যবহার বহুকালের। আধুনিককালে পশ্চিমারা একে ব্যাকইয়ার্ড বায়োডাইভারসিটি রেসিপি বলে মর্যাদায়িত করেছে। এই সকল উদ্ভিদের সংরক্ষণ, বিস্তার ও বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে বাণিজ্যিকভাবে জার্মপ্লাজম কেন্দ্র স্থাপন করা দরকার। গবেষণাতে অনুরূপ কেন্দ্র ব্যাপকভাবে কাজে লাগবে।
জ. কমিউনিটিভিত্তিক পর্যটন প্রকল্প: দেশে রয়েছে বেশ কিছু কমিউনিটি যেমন জামদানি কমিউনিটি, Archaeological Area-য় বসবাসরত কমিউনিটি, যাত্রাদল কমিউনিটি, কামার ও কুমার কমিউনিটি, তাঁতী কমিউনিটি, মৎস্যজীবি কমিউনিটি ইত্যাদি। এদের পেশা, জীবনধারা ও ঐতিহ্যকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠতে পারে কমিউনিটিভিত্তিক পর্যটন ব্যবস্থা। তাই ছোট ও সমন্বিত গ্রামীণ প্রকল্প আকারে এদেরকে এসএমই ঋণের আওতায় আনা যেতে পারে। এই ঋণদান পদ্ধতি কমিউনিটির সংযুক্তি, একীভূত মেধা ও শ্রমের মাধ্যমে সৃজনশীল পর্যটন ব্যবস্থা গড়ে তুলবে।
ঝ. সমবায়ভিত্তিক পর্যটন ব্যবস্থা: দেশে ধীরে ধীরে গড়ে উঠছে পর্যটন বিষয়ক সমবায় সমিতি। এদেরকে এসএমই ঋণের আওতায় আনা যেতে পারে। তাহলে ক্ষুদ্র পুঁজির অনেক মানুষ একত্রীত হয়ে তাদের মেধা ও শ্রম দিয়ে সমবায়ভিত্তিক পর্যটন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারবে।

উপখাত ৬: মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান – পর্যটনে মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানের অবস্থান, কার্যক্রম এবং অংশগ্রহণ অত্যন্ত শক্তিশালী। মধ্যস্থতাকারীদের কার্যাবলি ছাড়া পর্যটন খাত অকার্যকর হয়ে পড়বে। তাই এই উপখাতের অধীন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলির কর্মকান্ডের জন্য ফার্নিচার, ইক্যুইপমেন্ট এন্ড মেশিনারিজের জন্য লোন এবং পরিচালনার জন্য ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল প্রদান করা যায়। নিচে এদের বিবরণ দেওয়া হলো।
ক. ট্যুর অপারেটর: এরা বাজার থেকে পাইকারি মূল্যে পর্যটন সেবাপণ্য ক্রয় করে এবং পর্যটকদের চাহিদা মোতাবেক প্যাকেজিং করে নিজে অথবা ট্রাভেল এজেন্টের মাধ্যমে বিক্রয় এবং সবশেষে প্যাকেজ পরিচালনা করে। পর্যটনের এই মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান অত্যন্ত শক্তিশালী। বাংলাদেশে এখন প্রায় ৩ হাজার ট্যুর অপারেটর কাজ করছে।
খ. ট্রাভেল এজেন্ট: এরা কমিশনের বিনিময়ে এয়ারলাইন্স, বাস, ট্রেন, স্টিমার ইত্যাদি যানবাহনের টিকেট বিক্রয়, হোটেল ও রিসোর্ট বুকিংসহ যে কোন ধরণের পর্যটন সেবা সরবরাহকারীদের পক্ষে সেবা বিক্রয় করে এবং ট্যুর অপারেটরের এজেন্ট হিসেবে তাদের প্যাকেজ ট্যুর বিক্রয় করে। এদের সংখ্যা প্রায় ৪ হাজার ২০০।
গ. হজ এজেন্ট: এরা হজ ও ওমরাহ প্যাকেজ বিক্রয় ও পরিচালনা করে। এদের সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ৪০০।
ঘ. ট্যুর ব্রোকার: এরা পর্যটক ও পর্যটন সেবাদানকারীদের মধ্যে দালাল হিসেবে পেশাগত দায়িত্ব পালন করে। বাংলাদেশে এখনো এদেরকে তেমনভাবে পরিলক্ষিত হয় না। তবে এর আয়তন বৃদ্ধির সাথে সাথে এরা দৃশ্যমান হবে।

উপখাত ৭: পর্যটন শিক্ষা – পর্যটন ও আতিথেয়তা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, ভার্চুয়াল প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, কুকিং স্কুল, পর্যটন ও আতিথেয়তা বিষয়ক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন ইত্যাদি। উদ্যমী, শিক্ষিত ও প্রতিশ্রæতিশীল মানুষের সম্পৃক্ততায় গড়ে উঠা এই উপখাতের অধীন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলির কর্মকান্ডের জন্য ফার্নিচার, ইক্যুইপমেন্ট ও মেশিনারিজ ক্রয়ের জন্য লোন এবং পরিচালনার জন্য ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল প্রদান করা যায়।

উপখাত ৮: পর্যটন প্রযুক্তি – পর্যটনের সাথে সম্পৃক্ত যে কোন ধরণের সফটওয়ার ও Apps তৈরি বা ক্রয়, হার্ডওয়ার ক্রয়, হোটেল বা অন্য কোন কর্মস্থলের জন্য আইওটি, ডিজিটাল ও মেকানিক্যাল ডিভাইস তৈরি, চিত্রধারণের জন্য এরিয়াল ড্রোন তৈরি, মাটিতে চলাচলের জন্য ল্যান্ড ড্রোন তৈরি, জলতলে ভ্রমণের জন্য ওয়াটার ড্রোন ও সাবমেরিন ড্রোন তৈরি, Block chain প্রযুক্তি ব্যবহার করে ট্যুরিজম ডাটাবেস তৈরি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগে যে কোন পর্যটন প্রযুক্তি তৈরি, ইনটেলিজেন্ট হোটেল, ভবন বা অফিস নির্মাণ, Intelligent হোটেল নির্মাণ, ট্যুর অপারেটর ও হোটেলের জন্য ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ফিচার তৈরি ও প্রদর্শনের ইনস্টুমেন্ট ক্রয় ইত্যাদি। মেধাবী তরুণদেরকে এই উপখাতে সম্পৃক্ত করতে পারলে দেশের চেহারা পাল্টে যাবে। তাই এই উপখাতের অধীন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলির কর্মকান্ডের জন্য ফার্নিচার, ইক্যুইপমেন্ট ও মেশিনারিজ ক্রয়ের জন্য লোন এবং পরিচালনার জন্য ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল প্রদান করা যায়।

উপখাত ৯: পর্যটন প্রকাশনা – পর্যটন বিষয়ক পাঠ্যপুস্তকসহ যে কোন ধরণের বই ও ম্যাগাজিন, জার্নাল, বুলেটিন, পর্যটন বিষয়ক প্রিন্টেড পত্রিকা ও অনলাইন পোর্টাল, ট্যুরিজম রেডিও, ট্যুরিজম টেলিভিশন ইত্যাদি। প্রকাশনা পর্যটন খাতের ৩য় নয়নের মতো। তাই এই উপখাতের অধীন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলির কর্মকান্ডের জন্য ফার্নিচার, ইক্যুইপমেন্ট ও মেশিনারিজ ক্রয়ের জন্য লোন এবং পরিচালনার জন্য ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল প্রদান করা যায়।

উপখাত ১০: বিবিধ – পর্যটন মেলা ও এক্সপোজিশনসহ যে কোন ধরণের ইভেন্ট, পর্যটন উৎসব, পর্যটন কনফারেন্স, শিল্প প্রদর্শনী, ট্রাভেল লোন, হস্তশিল্পসহ যে কোন স্যুভেনির প্রস্তুতি, প্রতœতাত্তি¡ক স্থাপনা ও টেরাকোটার রেপ্লিকা তৈরি, ট্রাভেল গিয়ার সপ ও স্যুভেনির সপ স্থাপন ইত্যাদি। এই উপখাতের অধীন কর্মকান্ডগুলির সাথে অর্থ ও বাণিজ্যের সাথে প্রত্যক্ষ সম্পর্ক রয়েছে। তাই এদের জন্য ফার্নিচার, ইক্যুইপমেন্ট ও মেশিনারিজ ক্রয়ের জন্য লোন এবং পরিচালনার জন্য ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল প্রদান করা যায়।

Leave a Reply