গণপরিবহনে বেশি ভাড়া নিলে কঠোর ব্যবস্থা : কাদের

Share on Facebook

গণপরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়কারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব‌্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) এর প্রতি নির্দেশনা দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

বুধবার জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় নিজের সরকারি বাসভবন থেকে মেট্রোরেল প্রকল্পের কর্মকর্তাদের সাথে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে এ নির্দেশনা দেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, “আবার বেশ কিছু অভিযোগও আমরা পাচ্ছি। আমি প্রশাসনিক নজরদারি বাড়ানোর অনুরোধ করছি ওই সকল এলাকায়। অর্ধেক বা তার চেয়ে কম যাত্রী নিয়েও পরিবহন চলছে। আমি যাত্রীদেরকেও সচেতন থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। তা না হলে টার্মিনাল এবং বাসযাত্রা হতে পারে সংক্রমণ বিস্তারের কেন্দ্র।

“আমি মালিক-শ্রমিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়কারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব‌্যবস্থা গ্রহণের জন‌্য আমি বিআরটিএর সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিচ্ছি।”

করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে দুই মাসের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর ১ জুন থেকে অর্ধেক যাত্রী নেওয়াসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে গণপরিবহন চলা শুরু হয়েছে।

গণপরিবহনের ক্ষতি পোষাতে ভাড়া ৬০ ভাড়া বাড়ানো হলেও এর অতিরিক্ত আদায়ের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি না মানার ঘটনাও ঘটছে।

স্বাস্থ‌্যবিধি মানার ক্ষেত্রে উদাসীনতা সংক্রমণের মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, “করোনা প্রতিরোধে সরকার নানামুখি পদক্ষেপ নিয়েছে। শেখ হাসিনার সরকারের পদক্ষেপ দেশ-বিদেশে প্রশংসিত হচ্ছে। সরকার সাধারণ ছুটি তুলে নেয়ার সময় এবং আগে পরে স্বাস্থ‌্যবিধি ও সামাজিক দুরত্ব মেনে চলার জন‌্য জনগনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

“কিন্তু দুঃখজনক হলেও কিছু কিছু মানুষ স্বাস্থ‌্যবিধি মানতে শৈথিল‌্য প্রদর্শন করছে, যা সংক্রমণের মাত্রাকে বাড়িয়ে দিচ্ছে। এতে আক্রান্তের সংখ‌্যাও বাড়ছে। এ অবহেলা নিজের জন‌্য শুধু নয়, পরিবার, সমাজ তথ‌া অন‌্যদের জন‌্যও ভয়ানক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।”

সচেতনতার প্রাচীর গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলে, “তা না হলে জনস্বার্থে এবং জনস্বাস্থ‌্য রক্ষায় সরকার আরও কড়াকড়ি, আরও কঠোর হতে বাধ‌্য হবে।”

দেশে করোনাভাইরাসের ক্রমাবনতিশীল পরিস্থিতিতে সরকার সংক্রমিত এলাকা এবং এর নানা দিক বিবেচনায় নিয়ে এলাকাভিত্তিক বা জোনে বিভক্ত করার বিষয়টি ভাবছে বলে জানান তিনি।

“জনগনের ঘনত্ব, সংক্রমণেরর মাত্রা, রোগীর সংখ‌্যা, পাশ্ববর্তী এলাকার যোগাযোগ ব‌্যবস্থা, টেস্ট ফ‌্যাসিলিটি, চিকিৎসা সুবিধাসহ নানা বিষয় এর সাথে জড়িত। বিশেষজ্ঞগণ এই বিষয়ে কাজ করছে। কর্মপরিকল্পনা তৈরি করছে। বিস্তারিত পরিকল্পনা পাওয়া গেলে যাচাই-বাছাই করে সরকার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।”

মহামারীর সময় বিএনপি সার্কাসের হাতির মতো সমালোচনার বৃত্তেই আবর্তিত হচ্ছে বলেও দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “সংকটকে শেখ হাসিনার সরকার সম্ভবনায় রূপ দিতে নিরলস কাজ করছে। আর বিএনপি সংকটকে পুঁজি করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চায়।”

দলীয় নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ৫ নির্দেশনা

জীবন-জীবিকার প্রশ্নে সরকার সাধারণ ছুটি তুলে দিয়ে স্বাস্থ‌্যবিধি মেনে সবধরনের কার্যক্রম চালানোর নির্দেশনা দিয়েছে।ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন জনগণের স্বাস্থ‌্য সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের পাঁচটি নির্দেশনা প্রতিপালনের আহ্বান জানিয়েছেন ।

এগুলো হচ্ছে –

# অফিস আদালত, দোকানপাট, ব‌্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ সর্বত্র স্বাস্থ‌্যবিধি মেনে চলা ও সংক্রমণ রোধের কার্যপদ্ধতি অনুসরণ।

# গণপরিবহনে চলাচলের সময় স্বাস্থ‌্যবিধি মেনে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা।

# জনসম্মুখে সব সময় মাস্ক পরিধান ও স্বাস্থ‌্যবিভাগের নির্দেশনা মেনে চলা।

# দলীয় নেতাকর্মীরা নিজেরা স্বাস্থ‌্যবিধি মেনে চলবেন এবং তা প্রতিপালনে জনগণকে সচেতন করবেন।

# স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। জনপ্রতিনিধিরা অঞ্চলভিত্তিক তদারকির মাধ‌্যমে সংক্রমণ রোধের পাশাপাশি স্বাস্থ‌্যসেবা নিশ্চিতকরণেও ভূমিকা রাখবেন। আপৎকালীন সময়ে স্বাস্থ‌্যবিধি মেনে অসহায়-দুস্থ মানুষের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবেন।

Leave a Reply