নিউজিল্যান্ডর দর্শনীয় স্থানসমুহ

Share on Facebook

নিউজিল্যান্ড ওশেনিয়ার একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। দেশটি অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থিত। এর রাজধানীর নাম ওয়েলিংটন।এই দেশটি অসংখ্য ক্ষুদ্র দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত।নিউজিল্যান্ড দেশটা আয়তন অনুসারে পৃথিবীর ৭৫ তম বড়দেশ। নিউজিল্যান্ডের প্রাকৃতিক দৃশ্য অপূর্ব সুন্দর, তাই পর্যটকদের কাছে নিউজিল্যান্ড খুবই প্রিয়   জায়গা।নিউজিল্যান্ড এর দর্শনীয় স্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে- অকল্যান্ডে মিউজিয়াম,অকল্যান্ডের স্কাই টাওয়ার,জিওথার্মাল পার্কের আর্টিস্ট’স পাল্লেত্তে, ফক্স এন্ড ফ্রান্জ জোসেফ গ্লাসির, বেল তাসমান ন্যাশনাল পার্ক এন্ড টি আবেল তাসমান কোস্ট ট্র্যাক, নাপিইয়ার হাওকে’স বে ও কর্মান্ডেল পেনিনসুলা ইত্যাদি ।

কিছু দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে আলোচনা করা হল-

অকল্যান্ডের মিউজিয়াম

অকল্যান্ডে Museum of Transport and Technology (MOTAT) এক দর্শনীয় স্থান, ডিফেন্স  এর বিভিন্ন যুদ্ধজাহাজ,প্লেন, সৈনিকদের ব্যবহার করা নানারকমের জিনিস  রয়েছে। মিউজিয়াম এর আরেকটা ইউনিট ২ কিলোমিটার দূরে যেখানে পুরানো দিনের দমকল,প্রিন্টিং-মেশিন,  অ্যাম্বুলেন্স সাজানো রয়েছে। এই দুই জায়গা ঘুরে দেখার জন্য এক কামরার বিশেষ ট্রামগাড়ি দশ মিনিট অন্তর যাতায়াত করে। ট্রাম চালকেরা কালোপ্যান্ট সাদাজামা কালো কোট টাই আর তার সঙ্গে মানানসই কালো টুপি পরে ।ট্রাম চালকরা ভলেন্টিয়ার হিসাবে কাজ করে।

অকল্যান্ডের স্কাই টাওয়ার

অকল্যান্ডের বিখ্যাত স্কাই-টাওয়ার মানুষের তৈরি নিউজিল্যান্ডের সবথেকে উঁচু টাওয়ার যার উচ্চতা ৩২৮ মিটার। টাওয়ারে তিন লেভেলে তিনটি প্লাটফর্ম আছে, ১৯২ মিটার লেভেলে প্লাটফর্মের বাইরে টাওয়ারের চারিদিকে রেলিং-ছাড়া বারান্দায় ঘোরা যায়, আবার সেখান থেকে স্কাইজাম্পও করা যায়। নিউজিল্যান্ড দেশটা এডভেঞ্চার স্পোর্টসের জন্য বিশ্বসেরা, যেমন  বাংগি জাম্পিং , পায়ের গোড়ালিতে বিশেষ ধরনের ইলাস্টিক দড়ি পরে কোন উঁচু জায়গা থেকে লাফ দেওয়া, ইলাস্টিক দড়ির জন্য শরীরটা একবার উপর আর একবার নীচে হতে থাকে। ১৯০মি লেভেলে ৩৬০ ডিগ্রী ঘূর্ণায়মান রেস্টুরেন্ট আছে যা প্রতি ঘণ্টায় ঘণ্টায় ঘোরে।

 

ফক্স এন্ড ফ্রান্জ জোসেফ গ্লাসিয়ার 

ফ্রান্জ জোসেফ এর  প্রধান আকর্ষণ হল গ্লাসিয়ার দেখা । এখানে দুটো গ্লাসিয়ার আছে, ফ্রান্জ জোসেফ আর ফক্স গ্লাসিয়ার। যে জায়গাটা জুড়ে এই দুটো গ্লাসিয়ার সেটা ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের অংশ। বছরে প্রায় ২৫০০০০ ভিজিটার এই গ্লাসিয়ার দেখতে আসেন, ২০১২ সাল থেকে হেলিকপ্টার ছাড়া এই জায়গায় আসা যায়  না। তাছাড়া এই গ্লাসিয়ারের উপর হাঁটতে গেলে আইস এক্স  আর বিশেষ ধরনের বুট জুতা লাগে, যা ট্যুর অপারেটারেরা দেয়। এই  গ্লাসিয়ারের বরফগলা জল থেকেই ২৫ কিলোমিটার লম্বা ‘ওয়াইহ ’ নদীর উৎপত্তি যেটা ‘টাসমান সাগরে’ পড়েছে।  ফক্স গ্লাসিয়ার ১৩ কিলোমিটার  লম্বা,১৮৭২ সালে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্যার উইলিয়াম ফক্স এই  গ্লাসিয়ার দেখতে এসেছিলেন, তাঁর নাম অনুসারে এই  গ্লাসিয়ারের নামকরণ হয়। এই গ্লাসিয়ারের বরফগলা জল থেকে উৎপত্তি হয়েছে ফক্স নদীর। এই গ্লাসিয়ার দেখতে রোজ প্রায় ১০০০ পর্যটক এখানে আসেন। কিছুটা রাস্তা গাড়ী করে যাবার পর , গাড়ী পারকিং করে বাকি রাস্তা হেঁটে যেতে হয়। খুব কাছ থেকে দেখতে হলে প্রায় ৪ ঘণ্টা হাঁটতে হয়।

আবেল তাসমান ন্যাশনাল পার্ক এন্ড  আবেল তাসমান কোস্ট ট্র্যাক

আবেল তাসমান ন্যাশনাল পার্ক এন্ড আবুল তাসমান কোস্ট ট্র্যাক নিউজিল্যান্ডের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম। ৫১কিলোমিটারের এই দর্শনীয় উপত্যকাটি দক্ষিণ দ্বীপের সুনীতম অঞ্চলে অবস্থিত। এখানে রয়েছে ডলফিন ,পেঙ্গুইন ও বিভিন্ন ধরণের পাখির আবাসস্থল । এই দর্শনীয় স্থানটি উপভোগের জন্য অনেক পর্যটক এখানে  ঘুরতে আসে।

 

কুইন্সল্যান্ড শহর

এই শহরটাকে ঘিরে রয়েছে ‘ওয়াকাটিপু’ লেক। লেকটার গঠন Z এর মতন, এই শহরে আছে ৪৫০ মিটার  উপরে স্কাই লাইন রেস্টুরেন্ট, রেস্টুরেন্ট থেকে নীচে শহরটাকে খুবই সুন্দর লাগে। কুইন্সটাউনে আর এক বিখ্যাত খাবারের জায়গা ‘ফেরগবুর্গের’, এটা হ্যামবার্গার রেস্টুরেন্ট, সকাল ৮.৩০ টায় খোলে আর ভোর ৫ টায় বন্ধ হয়।

 

রোটারুয়ার  জিওথার্মাল পার্ক

রোটারুয়া  জায়গাটা সক্রিয় অগ্নেয়াগিরির মধ্যে অবস্থিত,৩০কিমি দূরে  জিওথার্মাল পার্ক  রয়েছে । সেখানে রয়েছে ‘সালফার কেভ’ একটা ছোট জলাশয়, জলের তিন চার রকমের রং। খানিকটা হলুদ, কিছুটা লালচে, তারই পাশে হালকা সবুজ আর হালকা নীল রঙের জল।

এছাড়াও রোটারুয়াতে আছে নিউজিল্যান্ডের আদিবাসী ‘মাওরি’ দের ভিলেজ, যেখানে সন্ধ্যা ৬-৯ টা অবধি মাউরিদের নাচ গানের অনুষ্ঠান হয়।মাওরিরা নাচ গানের পরে রান্না করে । মাটিতে গর্ত করে বড়বড় পাথর রেখে পাথরগুলো কাঠের আগুনে গরম করে। পাথরের উপর চারকোনা পাত্রে মাংস, আলু মশলা মাখিয়ে পাত্র ঢাকনা দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়, চার ঘণ্টায় রান্না তৈরি হয়ে  যায়। মাওরিরা এই ধরনের রান্নাকে হাঙ্গি বলে।

Leave a Reply