নববর্ষের অদ্ভুত কিছু ঐতিহ্য

Share on Facebook

স্পেন
স্পেনে নববর্ষ উদযাপনে ১২টি আঙ্গুর খাওয়ার প্রচলন আছে স্পেনে। নতুন বছরের প্রাক্কালে, ঘড়ির প্রতিটি ঘন্টার সাথে একটি করে আঙ্গুর খায় স্প্যানিশরা। প্রতিটি আঙ্গুর আগত বছরের একমাসের জন্য প্রতিনিধিত্ব করে সৌভাগ্যের। বার্সেলোনা ও মাদ্রিদের মতো বড় শহরগুলিতে, লোকজন একসাথে আঙ্গুর ও কাভা পানীয় খাওয়ার জন্য জমায়েত হয় স্কয়ারের কাছে।

কলোম্বিয়া
ভ্রমণে ভরা নতুন বছরের প্রত্যাশায়, কলম্বিয়ার বাসিন্দারা খালি স্যুটকেস বহন করে ঘুরে বেড়ায় বাড়ির ব্লকের চারপাশে। এছাড়াও কলম্বিয়ানদের মাঝে আছে বছরের শেষ দিনে জিন্সের পকেটে মসুর ডাল নিয়ে ঘুরবার মজার ঐতিহ্য। বলা হয়ে থাকে, এতে করে আসন্ন বছরে নগত টাকার অভাব হবে না তার।

ফিনল্যান্ড
ফিনল্যান্ডে, লোকেরা পানির পাত্রে গলিত টিন ফেলে দিয়ে আসন্ন বছরটি পূর্বাভাস দেয়। গলিত টিন শক্ত হয়ে এলে, তার আকার অনুযায়ীই নতুন বছর যাবে বলে ধারনা করা হয়। হার্ট কিংবা আংটির আকারের অর্থ বিয়ে, জাহাজ কিংবা নৌকার অর্থ ভ্রমণ এবং শুকরের অর্থ, প্রচুর পরিমাণের খাবার।

জাপান
নববর্ষ উদযাপনে জাপানিদের রয়েছে নিজস্ব ঐতিহ্য। তাদের কাছে দিনটি ‘ওমিসোকা’ নামে পরিচিত। জাপানের ঐতিহ্য অনুযায়ী থার্টি ফার্স্ট নাইটে বৌদ্ধ মন্দিরে ঘণ্টা বাজানো হয় এবং তা গুনে গুনে ১০৮ বার। তাদের বিশ্বাস, মানুষের ১০৮টি আকাঙ্ক্ষাই যত কষ্টের কারণ! অর্থাৎ সব নেতিবাচক আবেগ থেকে দূরে থাকতে হবে। জাপানের উৎসবটি সবচেয়ে ভালো উপভোগ করা যায় টোকিওর জোজোজি মন্দিরে।

ডেনমার্ক
অভিনব কায়দায় ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনে ডেনমার্কের নাগরিকদের খ্যাতি আছে। এটি শুধু বিচিত্র নয়, বরং কিছুটা বিদঘুটে। এদিন দেশটিতে থালা-পাত্র ভাঙার হিড়িক পড়ে যায়! ঠিকই পড়ছেন। পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশে পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাতে পার্টি হয়ে থাকে। কিন্তু ডেনমার্কের অধিবাসীরা থালা-পাত্র ভেঙে নতুন বছরকে বরণ করে। থার্টি ফার্স্ট নাইটে তারা অপ্রয়োজনীয় থালা-পাত্র নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। এরপর বন্ধুর বাসার দরজার সামনে ভেঙে বেড়ায়! যার দরজায় যত বেশি ভাঙা টুকরো পাওয়া যায়, বুঝতে হবে সে তত জনপ্রিয়।

রাশিয়া
এবার রাশিয়া যাওয়া যাক! সাম্যবাদী শাসনামলে দেশটিতে জাঁকজমক উৎসব তেমন একটা দেখা যেতো না। পরবর্তী সময়ে রুশদের মধ্যে ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন বিশেষ ঐতিহ্য হয়ে ওঠে। প্রত্যেকে নতুন বছরের শুভকামনা এক টুকরো কাগজে লিখে রাখে। এরপর এটি আগুনে জ্বালিয়ে এর ভস্ম একটি শ্যাম্পেন ভর্তি গ্লাসে ফেলেন তারা। তারপর তা ঘড়ির কাঁটা রাত ১২টা ঘর পেরিয়ে যাওয়ার আগেই পান করতে হয়।

থাইল্যান্ড
হৈচৈ আর আনন্দময় পার্টির গন্তব্যগুলোর মধ্যে অন্যতম থাইল্যান্ড। নববর্ষ উদযাপনে দেশটির রীতি অনেকটাই ভিন্ন। এটি ‘সংক্রান’ নামে পরিচিত। এর অংশ হিসেবে প্রতি বছরের ১৩ এপ্রিল তারা একে অপরের দিকে পানি ছিটিয়ে উৎসবে মাতেন। এদিন অসংখ্য মানুষকে বালতি ভর্তি পানি নিয়ে রাস্তায় দেখা যায়। এছাড়া থাইল্যান্ডবাসী এই বিশেষ দিনে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটায়। তরুণ-তরুণীরা পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। এদিন মন্দিরে যাওয়াটাও তাদের গুরুত্বপূর্ণ একটি রীতি।

চীন
প্রতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে চীনের চান্দ্র নববর্ষ। এ উপলক্ষে দেশটিতে থাকে বর্ণিল ও আনন্দময় আয়োজন। এর মধ্যে একাধিক ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে। চীনে নববর্ষ পালনের অনেক ঐতিহ্যের মধ্যে একটি অনেকটা বাংলাদেশে ঈদের সালামি দেওয়া-নেওয়ার মতো। চীনা বর্ষপঞ্জিকার পয়লা দিনে সেলামি দেওয়া হয় লাল খামের ভেতর। বড়রা লাল খামে টাকা রেখে ছোটদের উপহার দেন। চীনের আরেকটি সংস্কৃতি হলো আতশবাজি ফোটানো। তাদের বিশ্বাস, আতশবাজির শব্দ ও আগুনের মাধ্যমে শয়তানের আত্মাকে তাড়ানো যায়। 

Leave a Reply