আয়না ঝকঝকে রাখার পদ্ধতি

Share on Facebook

মানুষ রোজকার নানা কাজেই আয়না ব্যবহার করে থাকে। এই উপকারী বস্তুটার উদ্ভাবনের ইতিহাস অবশ্য সুপ্রাচীন। প্রায় আট হাজার বছর আগেই আয়নার ব্যবহার শুরু হয়। জায় এনোশ নামের এক গবেষক তাঁর জার্নালে তুলে ধরেছেন, প্রায় আট হাজার বছর আগে বর্তমান তুরস্কে অবসিডিয়ান নামে একধরনের অগ্নিশিলাকে ঘষামাজা করে আয়নাসদৃশ বস্তু প্রস্তুত করা হতো। পরবর্তী সময়ে মেসোপটেমীয় ও মিসরীয় সভ্যতার অধিবাসীদের মধ্যেও খ্রিষ্টপূর্ব চার হাজার থেকে তিন হাজার বছরের দিকে তামার তৈরি একধরনের আয়নার ব্যবহার হতো বলে নিশ্চিত হওয়া যায়।
আজ থেকে প্রায় দুই হাজার বছর আগে রোমান লেখক প্লিনি দ্য এল্ডারের লেখা একটি এনসাইক্লোপিডিয়াতে কাচের তৈরি আয়নার কথা বলা আছে

অবশ্য আধুনিক সময়ে ব্যবহৃত রৌপ্য আর কাচের সংমিশ্রণে তৈরি আয়না আবিষ্কার করেন জার্মান রসায়নবিদ জাস্টাস ফন লিবিগ। সেটা ১৮৩৫ সালের কথা। ধাতব রুপাকে ব্যবহার করে আয়না তৈরির যে প্রক্রিয়া তিনি উদ্ভাবন করেন, তার ওপর ভিত্তি করেই পরে অন্যান্য ধাতু যেমন পারদ, অ্যালুমিনিয়াম প্রভৃতির মিশ্রণে আয়না তৈরি হতে থাকে।

আয়না পরিষ্কার করা উচিত সঠিকভাবে, সঠিক উপকরণের মাধ্যমে।

প্রতিদিন একবার হলেও নিজেদের আমরা আয়নায় দেখে নিই। সেই আয়না ঝকঝকে না হয়ে ম্লান হয়ে থাকলে চেহারাও খারাপ দেখায়। আপনার শখের আয়নাটি নিয়মিত পরিষ্কার করার সঙ্গে সঙ্গে বিশেষ যত্নের প্রয়োজন।

এস্থেটিক ইন্টেরিয়রের অন্দরসজ্জাবিদ ও কনসালট্যান্ট সাবিহা কুমু জানান, আয়না অন্দরসজ্জায় গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। শুধু মুখ দেখার কাজে নয়, আয়নার সঠিক অবস্থান বাড়ির চেহারাও বদলে দিতে পারে। আয়নার সঙ্গে সঙ্গে ফ্রেমেরও যত্নের প্রয়োজন। তা না হলে ঘরের সৌন্দর্যেই ভাটা পড়বে।

আজকাল কাঠ, বাঁশ, বেত, মাটি, রড আয়রনসহ নানা উপাদানের বিভিন্ন ধরনের ফ্রেমের আয়না কিনতে পাওয়া যায়। বাড়ির অন্যান্য আসবাবের সঙ্গে মিলিয়ে আয়না বাছাই করে নিতে হবে, জানান সাবিহা কুমু। প্রতিদিন আয়না পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে নিতে হবে। জমকালো কাঠের কাজ করা ফ্রেমের আয়না বছরে একবার বার্নিশ করে নিলে দীর্ঘদিন নতুনের মতো থাকবে। বাড়িতে বার্নিশ করতে চাইলে বাজারে ক্লিয়ার বার্নিশ কিনতে পাওয়া যায়, তার সঙ্গে তারপিন তেল মিলিয়ে পাতলা কাপড় দিয়ে মুছে নিতে হবে। বাঁশ ও বেতের ফ্রেমেও এই বার্নিশ করা যায়। বাঁশ বা বেতের ফ্রেমে অনেক সময় ঘুণ ধরে। এ সমস্যা থেকে রেহাই পেতে মাঝেমধ্যে কীটনাশক স্প্রে করতে হবে। সাবিহা কুমু জানান, স্যাঁতসেঁতে ড্যাম ধরা দেয়ালে আয়না না রাখাই ভালো। এতে আয়না দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়।

ঘরোয়া কিছু উপায় মেনেও পরিষ্কার রাখতে পারেন আয়না –

বেকিং সোডা

আয়না পরিষ্কার করতে বেকিং সোডা বেশ কার্যকর। এক চা-চামচ বেকিং সোডা একটি স্ক্রাবারে নিয়ে পুরো আয়নায় ভালো করে ঘষে নিয়ে পানিতে ভেজানো তোয়ালে দিয়ে মুছে নিন। আয়নার দাগ চলে যাবে।

শেভিং ফোম

বাথরুমের আয়নায় শেভিং ফোম মেখে কিছুক্ষণ পর নরম কাপড় দিয়ে মুছে ফেললে পানির দাগ উঠে যাবে। তবে বেশিক্ষণ আয়নার ওপর শেভিং ফোম রাখা যাবে না। এতে উল্টো দাগ পড়ে যেতে পারে।

নিউজপ্রিন্ট কাগজ

ঘরে থাকা নিউজপ্রিন্ট কাগজ বা খবরের কাগজ দিয়েও আয়না সহজে পরিষ্কার করা যায়। পানিতে ভেজানো কাগজ দিয়ে আয়না ঘষে নরম কাপড় দিয়ে মুছে ফেলুন। চাইলে ভিনেগার মেশানো পানিতেও সংবাদপত্র ভিজিয়ে নেওয়া যায়। এটা আরও ভালো কাজ করবে।

Leave a Reply