সুন্দরবন দিয়ে জাহাজ চলার প্রতিবাদ করেননি কেন: প্রধানমন্ত্রী

Share on Facebook

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের বিরোধিতাকারীরা অতীতে সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলের প্রতিবাদ কেন করেননি সেই প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে দেশে নতুন চারটি মেরিন একাডেমির পাশাপাশি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন সংস্থার অবকাঠামো ও শতাধিক জলযানের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে তাদের কাছে এর জবাব জানতে চান তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের অনেকেই সুন্দরবন নিয়ে অনেক চিন্তা ভাবনা করেন, অনেক কথা বলেন। আমরা যখন রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র করতে গেলাম তার বিরুদ্ধে আন্দোলন, সংগ্রাম করে যাচ্ছেন।

“কিন্তু তাদের কাছে আমার প্রশ্ন ঘাসিয়খালী চ্যানেলটা যখন বন্ধ হয়ে গেল আর সুন্দরবনের ভেতর থেকে যেখানে জীববৈচিত্র্য পরিপূর্ণ জায়গা, যেখানে নীরবে সুন্দরভাবে তারা বসবাস করতো, কখনো তাদেরকে কেউ বিরক্তও করতে পারতো না। সেখান থেকে যখন জাহাজ আসে তখন আমাদের এই আন্দোলনকারীরা তখন চুপ ছিলেন কেন? তারা তখন এই কথাটা আনেনি কেন যে সুন্দরবনের ভেতর থেকে পণ্য পরিবহন করলে ওই জায়গাগুলোতে জীব বৈচিত্রও নষ্ট হবে, সুন্দরবনও নষ্ট হতে পারে।”

ঘষিয়াখালী চ্যানেলের নাব্যতা আওয়ামী লীগের সরকারই ফিরিয়ে এনেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “শাল্লা নদীর তীরে এখন আর পণ্যবাহী জাহাজ আসে না। সেখানে আমাদের সুন্দরবন এবং সুন্দরবনের যে জীববৈচিত্র্য, সেগুলো বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সেটা সংরক্ষিত হচ্ছে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মংলা বন্দরটা স্থাপনের সময়ও সুন্দরবনের যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা হয়েছিল। বিদ্যুৎকেন্দ্রও করা হচ্ছে সেদিকে লক্ষ্য রেখেই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও পায়রা বন্দরপ্রান্তে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন সংস্থার অবকাঠামো ও জলযানের উদ্বোধন এবং পায়রা বন্দর এলাকায় পুনর্বাসিত পরিবারের সদস্যদের মাঝে বাড়ির চাবি হস্তান্তর ও মতবিনিময় করেন।

তিনি বলেন, ১৯৯৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই সুন্দরবনকে ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। যেই অংশটা হেরিটেজ, সেখান থেকেও প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে ‘সুপার ক্রিটিক্যাল’ রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র করা হচ্ছে।

সরকারপ্রধান বলেন, ওই অঞ্চলের মানুষের তেমন কোনো কাজ ছিল না, তারা কিছু করে খেতে পারতো না, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ছিল না।

“মাছ ধরা অথবা মানে.. প্রকৃতপক্ষেই তারা খুব দরিদ্র এবং খুবই কষ্টের মধ্য দিয়ে জীবনযাপন করতো। শুধু মংলা বন্দরটা যতটুকু তাদের আর্থিক স্বচ্ছলতা দিত। কিন্তু এখন এই একটা জায়গা (বিদ্যুৎকেন্দ্র) ঘিরে তাদের অনেক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছে। জায়গাটারও অনেকটা আধুনিকায়ন হচ্ছে।”

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নীতিমালা বা চিন্তাভাবনা মাথায় রেখেই সরকার দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করে তার বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।

  • বাংলাদেশ সচিবালয়ের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় প্রান্ত থেকে এই সময় নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী,মন্ত্রনালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীসহ ঊর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply