স্টিমিং এর যত কথা

Share on Facebook

আমাদের দেহের সবচেয়ে স্পর্শকাতর অংশ হচ্ছে ত্বক। আমরা সবাই চাই সুস্থ, সুন্দর, পরিষ্কার, উজ্জ্বল ত্বক। আর এ জন্য প্রয়োজন নিয়মিত পরিচর্যা। পরিচর্যার প্রথম শর্ত ত্বক পরিষ্কার রাখা। ত্বক পরিষ্কার থাকলে এমনিতেই ত্বকের উজ্জ্বলতা ও স্নিগ্ধতা বজায় থাকে। ত্বকে ময়লা জমলে লোমকূপ বন্ধ হয়ে যায়। এতে ব্ল্যাকহেডস, হোয়াইট হেডস, ব্রণসহ নানা রকম সমস্যা হয়। তাই ত্বক পরিষ্কার রাখতে অনেকে স্টিম নিয়ে থাকেন।

ক্লিনজিং এ ত্বকের উপরিভাগের ময়লা দূর হলেও ভিতরের ময়লা দূর করার জন্যে প্রয়োজন পড়ে স্টিমিং এর। স্টিমিং করলে ত্বকের লোম কূপের মুখগুলো (পোরস) খুলে যায়। ভেতরের ময়লা সহজে বের হয়ে যায়। এজন্যে একটা পাত্রে ভাপ ওঠা গরম পানি নিন। মাথা তোয়ালে দিয়ে পেচিয়ে মুখটা পাত্রের উপর এনে ভাপ নিন। তৈলাক্ত এবং স্বাভাবিক ত্বকে ৭/৮ মিনিট এভাবে ভাপ নিতে পারেন। তবে শুষ্ক ত্বকে ২/৩ মিনিট ভাপ নেওয়াই যথেষ্ট। আবার ভাপ নিতে না চাইলে শুষ্ক ত্বকের অধিকারীরা হালকা কুসুম গরম পানিতে মোটা রুমাল ভিজিয়ে চিপড়ে আস্তে আস্তে করে ৫/৬ মিনিট সময় নিয়ে ত্বক মুছে নিতে পারেন। যাদের ত্বকে অ্যালার্জির প্রকোপ রয়েছে বা একটু নাজুক ধরনের তাদের জন্য এটি উপকারী নয়।ত্বকের ধরন বুঝে স্টিম নেয়া উচিত।সাধারণত একটু দূর থেকে অর্থাৎ ১২-১৫ ইঞ্চি দূরে থেকে স্টিম নেয়া ভালো।খেয়াল রাখবেন স্টিম যেন অনেকক্ষণ ধরে না নেয়া হয়। ৫/৭ মিনিট নিলেই হবে।

বাষ্প মুখের ছিদ্র খুলে দিয়ে ভিতরের ময়লা বের করে আনে। শুধু তাই নয় ছিদ্রের মধ্যে বসে থাকা ময়লা নরমও করে দেয়। যাতে পরে ক্লিন করলে সেটা সহজে বেরিয়ে আসে। এই বাষ্প ব্ল্যাকহেডসও অনেক নরম করে দেয়। ফলে সেটা সরিয়ে ফেলা অনেক সহজ হয়ে যায়।মুখের মধ্যে গরম বাষ্প গেলে আপনি ঘামতে শুরু করেন। এটা ত্বকের জন্য খুব ভাল। কারণ এতে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় এবং আপনার ত্বকে অক্সিজেন যোগায়। ফলে আপনার ত্বককে অনেক বেশি উজ্বল  দেখায়।  ছিদ্র উন্মুক্ত হয়ে যাওয়ার দরুন মৃত কোষ, ব্যাকটিরিয়া বা জীবাণু এবং অন্যান্য ময়লা সব বেরিয়ে আসে। মূলত এগুলোই আপনার ত্বকে অ্যাকনে সৃষ্টি করে। এগুলো বেরিয়ে আসায় অ্যাকনেও অনেক কমে যায়।  আমাদের শরীরের সিবাসিয়াস গ্রন্থি থেকে সেবাম নামে পিচ্ছিল ও তরল একটি পদার্থ নিঃসৃত হয়। এটি ত্বক ও চুল আর্দ্র রাখে। কিন্তু বাড়তি সেবাম যদি ত্বকের নীচে থেকে যায় তাহলে সেখানে ব্যাকটিরিয়া বাসা বাঁধে এবং অ্যাকনে দেখা দেয়। স্টিমিং করলে এই বাড়তি সেবাম বেরিয়ে আসে।

স্টিম হল একটি প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার যা আপনার ত্বককে আর্দ্র রাখে। কারণ এটি আপনার ত্বকের স্বাভাবিক তৈলাক্ত ভাব বজায় রাখতে সাহায্য করে।

যখন আপনার ত্বকের মধ্যে দিয়ে বাষ্প প্রবেশ করে তখন সেটা আপনার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দেয়। রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পেলে ত্বকে কোলাজেন আর ইলাসটিণের উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। এই দুটি বস্তু বৃদ্ধি পেলে আপনার ত্বক অনেক বেশি তরুণ দেখায় এবং ত্বকের টানটান ভাব বজায় থাকে।

হতে পারে যে আপনি বেশ কিছুদিন ধরে অ্যান্টি এজিং প্রোডাক্ট ব্যবহার করছেন বা রাত্রে নাইট ক্রিম লাগাচ্ছেন কিন্তু কোনও ফল পাচ্ছেন না। এর কারণ হল আপনার ত্বকের ছিদ্র বন্ধ হয়ে গেছে যার ফলে এই প্রোডাক্ট ত্বকের গভীরে প্রবেশ করতে পারছে না। স্টিমিং করলে ত্বকের মধ্যে এগুলো প্রবেশ করবে এবং অনেক বেশি কাজ দেবে।

Leave a Reply