সাহিত্যের আড়ালে হারানো পর্যটন কীর্তি যাদের

Share on Facebook

                                প্রথম পর্ব

প্রারম্ভিকাঃ কোন দেশ বা জাতি সম্পর্কে জানতে হলে প্রথমে জানতে হয় সেই দেশ বা জাতির সংস্কৃতি সম্পর্কে। আর ভাষা, পর্যটন ও সাহিত্য, সংস্কৃতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক বিষয়।

বাংলাদেশ নামক দেশটির জন্ম ১৯৭১ এ হলেও বঙ্গ বা বাংলা অনেক আগে থেকেই ছিল। খ্রিস্টপূর্ব তিন হাজার বছর আগেকার ঋগ্বেদের “ঐতরেয় আরণ্যক ” গ্রন্থে বঙ্গ নামে একটি দেশের প্রথম উল্লেখ  আছে।  বাংলা সংস্কৃতি, ভারতীয় উপমহাদেশের পূর্ব অঞ্চলে বাসিন্দা বাঙালিদের সাংস্কৃতিকে সংজ্ঞায়িত করে। বিশ্বব্যাপী বাংলা ভাষাভাষীর সংখ্য  আজ প্রায় ৩০ কোটির বেশি,  এটিই সম্ভবত একমাত্র ভাষা যার ভিত্তিতে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র তৈরি হয়েছিল। মোঘল আমলে ঢাকাকে মসজিদের শহর এবং প্রাচ্যের ভেনিস হিসাবে পরিচিত ছিল এই অঞ্চলটি। ব্রিটিশ কলকাতা, রাজবাড়ীর শহর হিসাবে পরিচিত ছিল। এই বিশাল বাংলার চট্টগ্রামে প্রথম মুসলিম সভ্যতা গড়ে ওঠার যে ইতিহাস আমরা জানি সেটাকে নতুন করে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করেছে তিন দশক আগে (১৯৮৬ সালের দিকে) আবিষ্কৃত লালমনিরহাটে অবস্থিত ৬৯ হিজরি সনে (৬৯১ খ্রিস্টাব্দ) নির্মিত ‘হারানো মসজিদ টি’।

যুগে যুগে বাঙালি জাতি এমন কিছু মানুষকে পেয়েছে যারা তাদের লেখনীতে যেমনটা বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন, সেই সাথে তাদের জীবনাচরণের মাধ্যমে অনুপ্রেরণাময় সোনালী ইতিহাস তৈরী করেছেন সংস্কৃতির অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ পর্যটনে। অথচ আমরা তাঁদেরকে কবি, প্রবন্ধকার, গীতিকার, নাট্যকার, শিক্ষক, বিপ্লবী এইসব পরিচয়ে জেনে এসেছি মাত্র। আমরা অনুধাবনই করি নাই সীমিত সুযোগ সুবিধার মধ্য দিয়েও তাঁরা  জীবনের বিভিন্ন বাঁকে কতটা বেশি ভ্রমণ করেছেন। যা বর্তমান প্রজন্মের পর্যটকদের জন্য অনুকরণীয় উদাহরণই বটে। আজকে তুলে ধরবো কিছু বাঙালি সূর্যসন্তানের কথা। যাদের মূল পরিচয় লেখক হলেও তাদের জীবনী ছোটবেলা থেকেই আমাদের মধ্যে ভ্রমণ স্পৃহা তৈরী করে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে।

  সৈয়দ মুজতবা আলী(১৩ সেপ্টেম্বর ১৯০৪-১১ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৪)

প্রথমে শুরু করা যাক সকলের প্রিয় রসগোল্লার ঝান্ডু’দা (সৈয়দ মুজতবা আলী) কে নিয়ে। যিনি স্কুল জীবনেই আমাদের মধ্যে বপন করেছেন ভ্রমণের পোঁকা। সৈয়দ মুজতবা আলী, বিংশ শতাব্দীর বাঙালি সাহিত্যিক। যিনি আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, অনুবাদক ও রম্যরচয়িতা। তিনি তাঁর ভ্রমণকাহিনির জন্য বিশেষভাবে জনপ্রিয়। বহুভাষাবিদ এই লেখকের রচনা একই সঙ্গে পাণ্ডিত্য এবং রম্যবোধে পরিপুষ্ট। যিনি ছিলেন একজন বাঙালি লেখক, সাংবাদিক, ভ্রমণ উৎসাহী, একাডেমিক, পণ্ডিত এবং ভাষাবিদ। তিনি ভারত, বাংলাদেশ, জার্মানি, আফগানিস্তান এবং মিশরে জীবনের বিভিন্ন সময় অতিবাহিত করেছেন ।

“দেশে বিদেশে” হচ্ছে কথা-সাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলী’র রচিত একটি ভ্রমণ কাহিনি, যা ১৯২৭ থেকে ১৯২৯ সালের আফগানিস্তান ভ্রমণের উপর রচিত। এটি ১৯৪৮ সালের মার্চ মাস থেকে ধারাবাহিকভাবে ‘দেশ’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। এই বইটিকে বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ভ্রমণ কাহিনি হিসেবে গণ্য করা হয়; অন্য কোন ভ্রমণ কাহিনি আজ পর্যন্ত বাংলা সাহিত্যে এর মতো এতোটা জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেনি। তাঁর রচিত অন্য একটি ভ্রমণ কাহিনি “জলে ডাঙ্গায়”।

ভ্রমণটা শুরু হয় তাঁর শৈশব থেকেই।  তাঁর শিক্ষা জীবন শুরু হয় সিলেটের গভর্নমেন্ট হাই স্কুল থেকে।  ১৯২১ সালে তিনি শান্তিনিকেতনে ভর্তি হন। এখানে তিনি সংস্কৃত, ইংরেজি, আরবি, ফার্সি, হিন্দি, গুজরাটি, ফরাসি, জার্মান ও ইতালীয়সহ পনেরোটি ভাষাশিক্ষা লাভ করে, ১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দে এখান থেকে বি.এ. ডিগ্রি অর্জন করেন।  অতঃপর দর্শনশাস্ত্র পড়ার জন্য বৃত্তি নিয়ে জার্মানির বন বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। ১৯৩৪-১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মিশরে কায়রোর আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন।

এরপর কর্মজীবনে ভ্রমণ করেন পৃথিবীর আরও কিছু দেশ। ১৯২৭ থেকে ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি কাবুলের শিক্ষা দপ্তরে অধ্যাপনা করেন।  ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে বরোদার মহারাজার আমন্ত্রণে তিনি বরোদা কলেজে তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। এরপর দিল্লির শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যোগ দেন। পরবর্তীতে ১৯৪৯ সালে তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানের বগুড়ার আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের খণ্ডকালীন প্রভাষকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি পঞ্চাশের দশকে কিছুদিন আকাশবাণীর স্টেশন ডিরেক্টরের দায়িত্ব পালন করেন পাটনা, কটক, কলকাতা এবং দিল্লিতে। ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি শান্তিনিকেতনে প্রত্যাবর্তন করেন। ১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি অবসরগ্রহণ করেন।

হাস্যরস সৃষ্টিতে পারদর্শিতা এবং এর মধ্য দিয়ে গভীর জীবনবোধ ফুটিয়ে তোলার ক্ষমতা তাঁকে বাংলা সাহিত্যে এক বিশেষ মর্যাদার আসনে বসিয়েছে। অনেকের মতে, ১৯৫০-৬০ দশকে মুজতবা আলী ছিলেন বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে জনপ্রিয় লেখক। তাঁর একটি বিখ্যাত উক্তি হলো: “বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয় না”।

সৈয়দ মুজতবা আলী পর্যটক তৈরী বা ভ্রমণ স্পৃহা তৈরিতে বাঙালি মনীষী দের মধ্যে সবচেয়ে স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব। এই মহান ব্যক্তি ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দের ১১ ফেব্রুয়ারি পিজি হাসপাতালে  মৃত্যুবরণ করেন।

হুমায়ূন আহমেদ (১৩ নভেম্বর ১৯৪৮ – ১৯ জুলাই ২০১২)

বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ সব কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন অন্যতম | তাঁর লেখা প্রতিটি সাহিত্যকর্ম আজও বাঙালী পাঠকদের অনেক প্রিয় | বাংলা কল্পবিজ্ঞান সাহিত্যের একমাত্র পথিকৃৎ তাঁকেই বলা হয় | সৃজনশীলতার প্রতিটি শাখায় তাঁর সমান বিচরণ ছিল।  স্বাধীনতা পরবর্তী বাঙালি জাতিকে হুমায়ুন আহমেদ উপহার দিয়েছেন তাঁর অসামান্য বই, নাটক এবং চলচ্চিত্র। তিনি অন্যদিকে আবার ছিলেন রসায়নের অধ্যাপক | হুমায়ূন আহমেদ এর বই, সমগ্র পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিতও হয়েছে। তাঁর  শিক্ষা জীবন ভীষন পরিবর্তনশীল ছিলো | যেহেতু তাঁর বাবা একজন পুলিশকর্মী ছিলেন, সেহেতু তাঁর বাবাকে চাকরিসুত্রে দেশের অনেক জায়গায় বদলি করা হতো | আর তাঁর এই বারবার বদলির জন্যই তাঁর ছেলে হুমায়ূন আহমেদ দেশের বিভিন্ন স্কুলে লেখাপড়া করার সুযোগ পায় |

বাংলা সাহিত্যের কিংবদন্তী হুমায়ূন আহমেদ বেড়াতে ভালোবাসতেন। বেড়ানোর জন্য সঙ্গী হিসেবে চাইতেন পরিবার কিংবা ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের। তিনি মনে করতেন বেড়ানোর আনন্দ এককভাবে উপভোগের নয়। প্রিয়জনের নিয়ে বেড়াতে পছন্দ করতেন তিনি, বেড়ানোর সময়কার খুব সাধারণ গল্পকেও অসাধারণভাবে বর্ণনা করতেন তিনি। দেশ বিদেশের বহু জায়গায় তিনি ঘুরে বেড়িয়েছেন। ভ্রমণের কিছু কিছু গল্প তিনি লিখেছেন তাঁর  ভ্রমণবিষয়ক গ্রন্থে। জনপ্রিয় ভ্রমণ বিষয়ক বই :  পায়ের তলায় খড়ম, রাবণের দেশে আমি ও আমরা, দেখা না-দেখা, হোটেল গ্রেভার ইন, উঠোন পেরিয়ে দুই পা, মে ফ্লাওয়ার ও যশোহা বৃক্ষের দেশে। হুমায়ূন আহমেদের গল্প উপন্যাসের মতো তাঁর ভ্রমণোপাখ্যানগুলোও পাঠক প্রিয়তায় ধন্য।

বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে হুমায়ূন আহমেদের রয়েছে কিছু অনবদ্য অবদান। ৮০ ভাগ পর্যটকই সেন্টমার্টিনে নেমে প্রথমে জিজ্ঞেস করেন হুমায়ূন আহমেদের বাড়ি কোনটা?  স্বপ্নের “সমুদ্র বিলাস” এখন শুধুই এক ভাঙা বাড়ি কিন্তু সবাই সেখানে যায়। আর কিছু না পেলে উনার বাড়ির সামনে সাইনবোর্ডের সাথে দাঁড়িয়ে ছবি তুলে । ‘সমুদ্র বিলাস’ দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ ও নারিকেল জিঞ্জিরা খ্যাত সেন্টমার্টিনে কিংবদন্তী কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের হাতে গড়া একটি বাড়ি। এই বাড়িকে ঘিরে সেন্টমার্টিনে গড়ে উঠেছে জমজমাট পর্যটনশিল্প। এক সময় একটি ঘর নিয়ে গড়ে ওঠা এই বাড়িটি এখন বাণিজ্যিক কটেজ হয়েছে। একটির জায়গায় গড়ে উঠেছে ছয়টি কটেজ। এই ৬টি কটেজের নামকরণ করা হয়েছে হুমায়ূন আহমেদের জনপ্রিয় উপন্যাস দারুচিনি দ্বীপ, কোথাও কেউ নেই, আমার আছে জল, হিমুর মধ্য দুপুর, মিসির আলী আপনি কোথায়, শ্রাবণ মেঘের দিন-এর নাম অনুসারে। উনি এখানে আসতেন বছর-২ বছরে একবার। আগে যে ঘরটায় তিনি থাকতেন সেটাকে দুই তলা করে শঙ্খনীল কারাগার নাম দেওয়া হয়েছে।

১৯৮৮ সালে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে মাত্র ১৬ হাজার টাকায় ২২ শতক জমি কিনে নেন হুমায়ূন আহমেদ। পরে ১৯৯৩ সালে সেখানে গড়ে তোলেন সমুদ্র বিলাস নামের একটি রিসোর্ট। এই রিসোর্টকে ঘিরেই পর্যটকরা সেন্টমার্টিনকে চিনতে শুরু করেন। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে পর্যটকদের সংখ্যা।

২০১২ সালের ১৯ জুলাই হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর পর এই রিসোর্টের হাল ধরেন তার স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন বলেন ‘সমুদ্র বিলাসে যেখানে বসে স্যার উপন্যাস লিখতেন সেই জায়গা সংরক্ষণ করা হবে। পর্যটক ও ভক্তদের জন্য আরও বড় পরিসরে নতুন নতুন কটেজ নির্মাণ করা হবে। সেন্টমার্টিনে করা হুমায়ূন আহমেদের সিনেমা দারুচিনি দ্বীপে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন রিয়াজ। তিনি বলেন, “উনি (হুমায়ূন আহমেদ) এখানে জায়গা না কিনলে এই কটেজ তো হতো না, সেন্টমার্টিনও এত আলোচনায় হয়তো আসতো না।“ ক্রুজ এন্ড ডাইনের  মত বিভিন্ন মানের আধুনিক শিপে করে আমরা এখন সেন্টমার্টিন দ্বীপে ঘুরতে যাই। অথচ জেলেদের ইঞ্জিন চালিত কাঠের বোটে করে বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেখানে গিয়েছিলেন হুমায়ুন আহমদ। আর এমন ত্যাগ আর ভালোবাসায় নির্মিত তার সমুদ্রবিলাস।

তিনি যখন গাজীপুরে নুহাশপল্লী স্থাপন করেন তখনকার সে গ্রাম্য জনপদে শেয়াল ডাকা সময়টা হয়তো অনেকেরই মনে আছে। কিন্তু  সময়ের ব্যবধানে তার আশেপাশে আজ তারকা মানের হোটেল রিসোর্ট সহ অন্যান্য বিনোদনকেন্দ্র মিলে পর্যটন স্থাপনা ২০০ টিরও অধিক। যার সুচনা বলা চলে হুমাযুন আহমেদের হাত ধরে। নুহাশ পল্লী ঢাকার অদুরে গাজীপুরে অবস্থিত বাগানবাড়ী। কার্যত এটি নুহাশ চলচিত্রের শুটিংস্পট ও পারিবারিক বিনোদন কেন্দ্র। হুমায়ূন আহমেদ ১৯৮৭ সালে ঢাকার অদূরে গাজীপুর জেলার সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের পিজুলিয়া গ্রামে ২২ বিঘা জমির ওপর স্থাপিত বাগান বাড়ি নুহাশ পল্লী গড়ে তুলেন। বাড়িটির নামকরণ করা হয় স্ত্রী গুলতেকিন ও তার প্রথম পুত্র নুহাশ হুমায়ূনের নামে। বর্তমানে এর আয়তন আরও বৃদ্ধি করে ৪০ বিঘা করা হয়েছে। বাড়িটির সর্ব উত্তরে একটি পুকুর রয়েছে। পুকুরটির নাম ‘লীলাবতী’। এর নামকরণ করা হয় তার দ্বিতীয় স্ত্রী শাওন ও তার অকালপ্রয়াত কন্যার নামে, যে পৃথিবীর আলো দেখার পূর্বে মৃত্যুবরণ করে।

গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে বর্তমান বাংলাদেশের তরুণ তরুণীদের  পর্যটনমুখী মনোভাব , অর্থাৎ দলবেঁধে ঘুরতে যাওয়াটা প্রতক্ষ্য ও পরোক্ষ ভাবে যার অনুপ্রেরণায় শুরু হয়েছে, তাকে এদেশের নতুনধারার পর্যটনের প্রবর্তক বলাই যায়। তিনি বাংলাদেশের পর্যটনের একটি নতুন যুগের সূচনা করেছিলেন। পাকিস্তানের প্রাচীনতম ও সর্বাধিক পঠিত ইংরেজি সংবাদপত্র ডন তাকে “বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক কিংবদন্তি” বলে উল্লেখ করে।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাকে আটক করে এবং নির্যাতনের পর হত্যার জন্য গুলি চালায়। কিন্তু তিনি অলৌকিকভাবে বেঁচে যান। ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে ১৯শে জুলাই ২০১২ তিনি নিউ ইয়র্কের বেলেভ্যু হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন । মৃত্যুর পর তাঁকে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয় এবং নুহাশ পল্লীতে অবস্থিত লিচুগাছের ছায়ায় চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন হুমায়ূন আহমেদ।

সারসমাপ্তিঃ  এ সকল খ্যাতিমান মানুষের কীর্তি সমূহ অল্প কথায় ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। তাঁরা সারাজীবনে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মান উন্নয়নে অবদান রেখেছেন বিভিন্ন ভাবে। আমি শুধু একজন পর্যটক ও ভ্রমণপ্রেমী মানুষ হিসেবে তাদের জীবনের কিছু গল্প তুলে ধরেছি।  যা বর্তমান ও ভবিষ্যৎ পর্যটন শিল্প এবং পর্যটক তৈরিতে যুগযুগ ধরে অনন্য ভূমিকা রেখে চলেছে। অথচ আমরা তাদের এই অতিসাধারণ কীর্তিটাকে ঢেকে ফেলি অন্য কোন খ্যাতির আড়ালে। আমি সেই পর্দাটাকে সরিয়ে পর্যটন প্রেক্ষাপটে তাঁদেরকে আপনাদের সামনে আনার চেষ্টা করেছি মাত্র।

লেখকঃ
কিশোর রায়হান
পরিচালক অপারেশন
বাংলাদেশ ট্যুরিজম এক্সপ্লোরারস এসোসিয়েশন – বিটিইএ

Leave a Reply