ক্যারিয়ার গড়তে ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট

Share on Facebook

পর্যটন শিল্পের সাথে একান্তভাবে যে বিষয়টির যোগসূত্র রয়েছে তাহলো ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট। ট্যুরিজম এ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট শুধু পর্যটন বা হোটেল ব্যবস্থাপনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় বরং একই সঙ্গে সরকার, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির সাথেও সমন্বয় রয়েছে ব্যাপক।

বাংলাদেশসহ বিশ্বের দ্রুতবর্ধনশীল পর্যটন ও সেবা খাতে দক্ষ ও অভিজ্ঞ জনবলের বাড়তি চাহিদা পূরণে ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি বিভাগই সবচেয়ে বিকল্প উৎস। পর্যটন আজ বিশ্বের একক বৃহৎতম শিল্প। বিশ্ব অর্থনীতির প্রধান চাবিকাঠি হিসেবে খ্যাত পর্যটন শিল্পে রয়েছে ১০৯ টি খাতের সমন্বয়। গড়ে প্রতি আড়াই সেকেন্ডে ১ টি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরী হয় এই শিল্পে। বিশ্বজুড়ে ৩০০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এই শিল্পের সাথে জড়িত আছেন। বাংলাদেশেও প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৩৫ লক্ষ পেশাজীবি এই শিল্পের সাথে জড়িত। সংশ্লিষ্টরা বলছেন আগামী দিনগুলোতে এই পেশায় কর্মীচাহিদা আরও বাড়বে।

ক্যারিয়ার গড়ার ক্ষেত্রে পর্যটন শিল্পে নতুন নতুন ক্ষেত্র সৃষ্টি হচ্ছে। ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজম্যান্ট বিভাগ নিয়ে পড়ালেখা করলে হোটেল, রেস্টুরেন্ট, এয়ারপোর্ট, এয়ারলাইনস, ভ্রমণ সংস্থা, ট্যুর অপারেটর, হাসপাতাল, ক্রুজ লাইন, বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ড (বিটিবি), বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন (বিপিসি), হোটেল ও পর্যটন প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান, থিম পার্ক, স্পা, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, জাতীয়/স্থানীয় পর্যটন সংস্থা, সরকারী ও বেসরকারী সংস্থাসহ বিভিন্ন সরকারী/বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে শিক্ষকতা করারও সুযোগ রয়েছে।

বিশ্বের প্রতি ১১টি চাকরির মধ্যে একটি চাকরি পর্যটন শিল্পে হয়ে থাকে। জিডিপিতে অবদান ৫ শতাংশ। পর্যটন বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, ২০২০ সাল নাগাদ বিশ্ব পর্যটকের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ১৬০ কোটি। এই বিপুল সংখ্যক পর্যটকের ৭৩ শতাংশই ভ্রমণ করবেন এশিয়ার দেশগুলোতে।

পর্যটন শিক্ষা শতভাগ কর্মমুখী শিক্ষা। বাংলাদেশে ট্যুরিজম এ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট অথবা হোটেল ম্যানেজমেন্ট বিষয়টি নতুন হলেও বিশ্বের অনেক দেশে বহু আগ থেকে তা পড়ানো হয়। বিশ্বায়নের যুগে চাকরির বাজার এখন শুধু দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় বাইরেও রয়েছে অবারিত সুযোগ।

বর্তমানে চাকরির বাজার খুব প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠেছে। প্রতিযোগিতামূলক এই চাকরির বাজারে সহজেই চাকরি পেতে ট্যুরিজম এন্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগ হতে পারে আপনার উত্তম পছন্দ। ওয়ার্ল্ড ট্যুরিজম অর্গানাইজেশনের মতে, বর্তমানে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ শিল্প হলো পর্যটন শিল্প। সারা বিশ্বে কর্মসংস্থানের দিক থেকে পর্যটন শিল্প সবচেয়ে এগিয়ে, মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ১১ শতাংশ।

পর্যটন শিল্প একটি সম্ভাবনাময় ও ক্রমবর্ধমান ক্ষেত্র হওয়ায় পর্যটন কেন্দ্রিক পড়াশোনার কদর দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে আয়ের অন্যতম একটি উৎস পর্যটন শিল্প। সরকার পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের জন্য ইতিমধ্যে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রনালয় নামে আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন করেছে। পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের জন্য রয়েছে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড এবং বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন।

এদেশে রয়েছে অসংখ্য পর্যটন কেন্দ্র। পর্যটন কেন্দ্রগুলোর প্রচার ও ব্যবস্থাপনার জন্য দরকার দক্ষ জনবল। রয়েছে আন্তর্জাতিক মানের ফাইভ স্টার হোটেল, রিসোর্ট এবং বিলাসবহুল রেস্টুরেন্ট। আর এসব আন্তজার্তিক মানের ফাইভ স্টার হোটেল, রিসোর্ট এবং বিলাসবহুল রেস্টুরেন্ট ব্যবস্থাপনার জন্য দরকার ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজম্যান্ট বিভাগ থেকে স্নাতক স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা মেধাবী ও দক্ষ জনবল। যুগোপযোগী এই সাবজেক্টের কদর বাড়ার কারণে দেশের ৭ টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, ১৪ টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এবং ৭ টি কলেজে এই সাবজেক্ট চালু করা হয়েছে।

বর্তমান বিশ্বে পর্যটন শিল্পের এখন রমরমা অবস্থা। প্রতিনিয়ত পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে লেগেই রয়েছে মানুষের উপচে পরা ভীর। ক্রমবর্ধমান পর্যটকদের জন্য প্রয়োজন আবাসন সুবিধাসহ অন্যান্য ব্যবস্থাপনার। ফলে প্রতিনিয়ত বাড়ছে দক্ষ কর্মীর চাহিদা। দেশের বাইরেও আছে লোভনীয় চাকরির হাতছানি।

তাই এইচএসসি পাসের পর ভর্তি হতে পারেন হোটেল এই বিষয় উচ্চতর ডিগ্রি নেওয়ার জন্য। প্রতিষ্ঠান ও কাজভেদে বেতন কাঠামো ভিন্ন হয়। পর্যটন শিল্পের একজন দক্ষ কর্মীর বেতন চাকরির শুরুতে ১২ বা ১৫ হাজার টাকা থেকে শুরু হলেও অভিজ্ঞতা বাড়ার সাথে বেতনও বাড়তে থাকে। বাংলাদেশেই পর্যটন খাতে চাকরি করে লাখ টাকার উপরে বেতন পাওয়া সম্ভব উন্নত দেশেতো আরও বেশি

তোফায়েল আহমেদ
ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ, ড্যাফোডিল ইনিস্টিউট অব আইটি।
ইন্টার্নশিপ রিপ্লেসমেন্ট সেক্রেটারি – বাংলাদেশ সোসাইটি ফর ট্যুরিজম ইনোভেশন – স্টুডেন্টস উয়িংস

Leave a Reply