এক মাসে বেড়েছে দ্বিগুণ রপ্তানি

Share on Facebook

করোনাভাইরাস মহামারীতে বাংলাদেশের রপ্তানি নেমেছিল তলানিতে, তাতে থেকে উঠতে থাকলেও রপ্তানিকারকরা আশাবাদী হতে পারছেন না।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর রোববার প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, সদ্য সমাপ্ত জুন মাসে পণ্য রপ্তানি থেকে ২৭৮ কোটি ৪৪ লাখ ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ।

এই অঙ্ক মে মাসের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ এবং এপ্রিল মাসের চেয়ে সাড়ে পাঁচ গুণ বেশি।

কোভিড-১৯ মহামারীর ধাক্কা বাংলাদেশে লাগতে শুরু করে গত মার্চ মাস থেকে, এপ্রিলে রপ্তানি কমে মাত্র ৫২ কোটি ডলারে নেমে এসেছিল, যা ছিল রেমিটেন্সের চেয়েও কম।

বিধিনিষেধ শিথিল করে কলকারখানা চালুর পর মে মাসে রপ্তানি বেড়ে ১৪৬ কোটি ৫৩ লাখ ডলারে দাঁড়ায়। অর্থবছরের শেষ মাস জুনে তা আরও বাড়ল।

সবমিলিয়ে গোটা ২০১৯-২০ অর্থবছরে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ ৩ হাজার ৩৬৭ কোটি ৪০ লাখ (৩৩.৬৭ বিলিয়ন) ডলার আয় করেছে। এই অঙ্ক আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৭ শতাংশ কম। আর লক্ষ্যের চেয়ে কম ২৬ শতাংশ।

গত অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ২৭ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার। লক্ষ্য ছিল ৩৮ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার।

২০১৮-১৯ অর্থবছরে তৈরি পোশাক থেকে আয় হয়েছিল ৩৪ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার।

এ হিসাবে গত অর্থবছরে তৈরি পোশাক রপ্তানি কমেছে ১৮ দশমিক ১২ শতাংশ। লক্ষ্যের চেয়ে এ খাতে আয় কমেছে ২৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ।

২০১৯-২০ অর্থবছরে নিট পোশাক রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ১৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার। আগের বছরের চেয়ে আয় কমেছে ১৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ।

উভেন পোশাক থেকে আয় হয়েছে ১৪ দশমিক ০৪ বিলিয়ন ডলার। প্রবৃদ্ধি কমেছে ১৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ।

গত বছরের ডিসেম্বরের শেষে চীনে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হলে তৈরি পোশাক শিল্পের কাঁচামাল আনা বন্ধ হয়ে যায়।

ফলে বাংলাদেশের পোশাক খাতে ফেব্রুয়ারি থেকেই প্রভাব পড়তে শুরু করেছিল। এরপর শুরু হয় ক্রয়াদেশ বাতিলের হিড়িক। মার্চ মাসে এসে রাপ্তানির অঙ্কে ধস স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

ওই মাসে ২২৫ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়, যা আগের বছরের মার্চের চেয়ে ২০ শতাংশ কম ছিল। ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসের (জুলাই-মার্চ) মধ্যে সেটিই ছিল বড় ধাক্কা।

ইপিবি’র তথ্যে দেখা যায়, এপ্রিল মাসে গত বছরের এপ্রিলের চেয়ে রপ্তানি আয় কমেছিল ৮৫ শতাংশ। মে মাসে কমে ৬১ শতাংশ। আর সর্বশেষ জুনে কমেছে ২ ৫ শতাংশ।

জুন মাসে রপ্তানি হয়েছে ২৭১ কোটি ৪৯ লাখ ডলারের পণ্য। লক্ষ্য ছিল ৩৯৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আয় হয়েছিল ২৭৮ কোটি ৪৪ লাখ ডলার।

রপ্তানিকারকরা বলছেন, কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে এপ্রিল মাসের পুরোটা সময় পোশাক কারখানাগুলো বন্ধ ছিল। বিশ্বব্যাপী পরিস্থিতিও ছিল খুব খারাপ। সে কারণে এপ্রিলে রপ্তানি তলানিতে নেমে এসেছিল।

বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ে মূল ভূমিকা থাকে তৈরি পোশাক শিল্পের; মে মাসে পোশাক কারখানাগুলোতে উৎপাদন হয়েছে। আগের ‘অর্ডার’ও ছিল। ইউরোপের দেশগুলোর পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ায় রপ্তানিও কিছুটা বেড়েছে।

Leave a Reply