আজ থেকে শরু রমজানের তাৎপর্যময় তৃতীয় দশক

Share on Facebook

লেখক-কামিল শিবলী, ফিল্যান্স রাইটার
রমজানের রহমত ও ক্ষমা পর্ব শেষে নাজাতের অধ্যায় শুরু হচ্ছে আজ সুর্যাস্তের পর থেকে।

রমজানের শেষ দশকের গুরুত্ব অন্য দুই দশকের থেকে অনেকে বেশি। তার কারণ হচ্ছে এ দশকে শবে কদর রয়েছে। হাজার মাসের থেকেও উত্তম। এ রাতের কারণেই রমজানের তাৎপর্য ও ফজিলত পরিপূর্ণ হয়েছে।

হযরত আয়েশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) বলেন, যখন রমজানের শেষ দশক আসত, তখন নবী করিম (সা.) কোমরে কাপড় বেঁধে নেমে পড়তেন (বেশি বেশি ইবাদতের প্রস্তুতি নিতেন) এবং রাত জেগে থাকতেন। আর পরিবার-পরিজনকেও তিনি জাগিয়ে দিতেন। (বুখারি)

উপরোক্ত হাদিস থেকে বোঝা যায় যে, শেষ দশকের তাৎপর্য ও ফজিলত কত কত বেশি। তাই শেষ দশককে শবে কদরের এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তির দশক বলা হয়েছে। এই দশকে ইতিকাফের সঙ্গে লাইলাতুল কদরকে তালাশ করবো এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে ধর্ণা দিব।

এদিকে, বিশ দিন এবাদতের পর রমজানের শেষ দিকে এসে অনেকের মধ্যে ইবাদতে ঢিলেমি দেখা যায়। মনে হয় ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। অনেকে তারাবি পড়া বন্ধ করে দেন। খতম শেষ হয় যায় অনেক স্থানে। মসজিদে মুসল্লির পরিমাণ কমে আসে। যেখানে রাসূল (সা.) প্রথম দুই দশকের চেয়েও শেষ দশকে বেশি বেশি ইবাদত করতেন সেখানে আমাদের এই অবস্থা বাঞ্ছনীয় নয়। আর এখন তো করোনা পরিস্থিতি তাই এবাদতের সুযোগও অনেক বেশি। শুধু অন্য মাধ্যমগুলোতে সময় নষ্ট না করে, বেশি বেশি আল্লাহ দরবারে নাজাতের জন্য ফরইয়াদ করা । এই সুন্দর আর গোছানো জীবন যেমন এক করোনায লন্ডভন্ড হয়ে গেল তেমনি ওপারের জীবন ও যেন শেষ না হয়ে যায় সেদিকে খেয়ার রাখার প্রাকটিসই হচ্ছে এই দশ দিনের এবাদত্ যাকে ইসলামে ইতকুন মিনার দশক বলা হয়।
আমাদের ভেতর এখনও ইসলাম বিরোধী চিত্র দেখা যায়, সেটি হলো ব্যবসায়ীরা রমজান মাসে লাভের পরিমাণ বাড়িয়ে দেন। অন্য এগার মাসে যে লাভ করেন এক রমজান মাসেই তারচেয়ে বেশি করেন। এই মোহ হলো শয়তানের ধোঁকা। ন্যুনতম সহনশীল ও সহানুভূতি থাকলে কেউ এ ধরনের আচরণ করতে পারে না। অন্যান্য মুসলিম দেশ এ চিত্রের বিপরীত। এক্ষেত্রে আমাদের বিবেক জাগ্রত করতে হবে। না হলে রোজার অর্জন বিফলে যাবে।

এসব কর্মকাণ্ডের জন্য লজ্জিত এবং অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই। দোষ-ত্রুটি পরিত্যাগ করে সৎ গুণাবলি অর্জনের চেষ্টা করতে থাকি। নাজাত লাভের জন্য আল্লাহর কাছে সমর্পিত হই।

দান, ফিতরা এবং যাকাতের মাধ্যমে রোজাদার পায় আল্লাহ থেকে পুরস্কার। এ মাসে দান-সদগাহ যা কিছুই করেন তাতে রয়েছে অধিক পূণ্য। এ থেকে আপনি পাপমুক্ত হতে পারেন। এমনকি জাহান্নাম থেকে নাজাতও পেতে পারেন।

Leave a Reply