বিমানগুলো দিনেদিনে হয়ে উঠছে আরও দ্রুতগামী আরও বিলাসবহুল

Share on Facebook

অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমান সময়ে “সময়”ই সবচেয়ে বেশি দামি। মানুষ এখন সময় বাঁচাতে সবকিছুই দ্রুত করতে চায়। কোনোকিছু করতে পারাটাই এখন দক্ষতা নয়, কোনোকিছু সম্ভাব্য কম সময়ে করতে পারাটাই দক্ষতা। নিজের দক্ষতা বাড়াতে মানুষও ছুটছে। অবিরতভাবেই ছুটছে। ছুটতে ছুটতে মানুষের অর্জনও এখন কম নয়। অর্জনের পরে মানুষ এখন বিলাসী হয়েও উঠছে। সবকিছুতেই চাই আরামদায়ক আবহ। সেই বিলাসের ছোঁয়া এখন আরও বেশি করে লেগেছে বিমানে। বিমানগুলো এখন আরও দ্রুতগামী আরও আরামদায়ক আরও বিলাসী হয়ে উঠছে।

মার্কিন বিমান প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান বোয়িং বিবিজে ৭৭৭এক্স মডেলের একটি বিমান বানিয়েছে যেখানে বসার জন্য সোফার পাশাপাশি রয়েছে আরাম করার জন্য বালিশও। ট্রে টেবিলের পাশাপাশি ডাইনিং টেবিলও রয়েছে। নতুন এই বিমানটির মাধ্যমে ভ্রমণকারীরা পৃথিবীর দুই প্রান্তের দুই শহরে বিরতিহীন যাতায়াত করতে পারবে। বিবিজে ৭৭৭এক্স মডেলের বিমানটির ১১ হাজার ৬৪৫ নটিক্যাল মাইল (২১ হাজার ৫৭০ কিলোমিটার) পাড়ি দেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে। ফলে এর মাধ্যমে বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ বাণিজ্যিক ফ্লাইট চালানো যাবে। তবে কোন রুটে এটি ব্যবহার হচ্ছে তার ওপর তা নির্ভর করছে।

নতুন মডেলের মাধ্যমে সবচেয়ে দূরবর্তী বিরতিহীন ফ্লাইট চালানোর মুকুট এয়ারবাসের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে পারবে বোয়িং। এ বছর এয়ারবাস এ৩৫০-৯০০ ইউএলআর (আলট্রা-লং রেঞ্জ) বিমানের মাধ্যমে সিঙ্গাপুর থেকে লন্ডনে ১৭ ঘণ্টার ফ্লাইট আবারও চালু করে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস। এটাই এখনও বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘতম বাণিজ্যিক বিমানযাত্রা। তবে সিঙ্গাপুর ও লন্ডনের দূরত্বটা কেবল ৯ হাজার নটিক্যাল মাইলের (১৬ হাজার ৭০০ কিলোমিটার)। বোয়িংয়ের নতুন বিমান এর চেয়েও বেশি উড়তে সক্ষম। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, যেকোনও বাণিজ্যিক বিমানের চেয়ে কোনও বিরতি ছাড়াই বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি ঘুরে বেড়াতে সক্ষম এই আকাশযান।

মধ্যপ্রাচ্য বিজনেস এভিয়েশন অ্যাসোসিয়েশন শো’কে (এমইবিএএ) বোয়িং বিজনেস জেটসের প্রধান গ্রেগ ল্যাক্সটন বলেছেন, ‘আমাদের এক্সক্লুসিভ যাত্রীরা দারুণ জায়গায় বসে আরামদায়কভাবে সরাসরি তাদের গন্তব্যে যেতে চায়। নতুন বিবিজে ৭৭৭এক্স তাদের সেই স্বাদ দেবে। বিশ্বের কোনও বিমান আগে কখনও এমন সুবিধা মেলেনি। দীর্ঘ যাত্রায় ভ্রমণের নতুন সংজ্ঞা দাঁড় করাবে এই আকাশযান।’

জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক সিটির সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার পার্থ শহরের মধ্যে সংযোগ ঘটাতে বোয়িংয়ের নতুন বিমান ব্যবহার করা যাবে। এখন এই দুটি গন্তব্যের মধ্যে যাতায়াতের ক্ষেত্রে একটি বিরতিসহ একদিনেরও বেশি সময় প্রয়োজন হয়।

বোয়িংয়ের নতুন বাণিজ্যিক বিমানের দুটি সংস্করণ তৈরি হয়েছে। এগুলোর মডেল বিবিজে ৭৭৭-৮ ও ৭৭৭-৯। তবে ৭৭৭-৯ বিমানের মাধ্যমে কোনও বিরতি ছাড়াই ১১ হাজার নটিক্যাল মাইল (২০ হাজার ৩৭০ কিলোমিটার) পাড়ি দেওয়া সম্ভব। অবশ্য দুটোতেই বড়সড় কেবিন মিলবে।

১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর বোয়িং বিজনেস জেটস বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ২৬১টি অর্ডার পেয়ে এখন পর্যন্ত ২৩৪টি বিমান সরবরাহ করেছে। এর মধ্যে আছে বিবিজে ম্যাক্স ও ৭৮৭ ড্রিমলাইনার। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ইতোমধ্যে ‘আকাশবীণা’ ও ‘হংসবলাকা’ নামে দুটি ড্রিমলাইন নিজস্ব বহরে যুক্ত করতে পেরেছে।

Leave a Reply