প্রেমিকের শেষ ইচ্ছে পূরণ করতে বিয়ের পোশাকে সাজলেন প্রেমিকা

Share on Facebook

‘১১ নভেম্বরের মধ্যে আমি ফিরে না এলেও বিয়ের জন্য তৈরি হবে। যে বিয়ের পোশাক আমি তোমার জন্য পছন্দ করেছি সেটা পরবে। খুব সুন্দরভাবে সাজবে। শিলার (বিয়ের আয়োজক) কাছ থেকে তরতাজা সাদা গোলাপ চেয়ে নেবে। এটা হাতে নিয়ে ছবি তুলবে। এরপর আমাকে এসব ছবি পাঠিয়ে দেবে।’ কথাগুলো রিও নন্দ প্রতমা বলেছিলেন ইনতান সিয়ারিকে।

রিও নন্দ প্রতমা আর ইনতান সিয়ারি পরস্পর প্রেমিক-প্রেমিকা। তারা ঘর বাঁধার স্বপ্নও দেখছিলেন। এমনি পারিবারিকভাবেই বিয়ের দিনও ঠিক করা ছিল ১১ নভেম্বর ২০১৮। তাদের বাগদানও সম্পন্ন হয়েছিলো।

রিও আর সিয়ারি একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। ইন্দোনেশিয়ার পাঙ্কাল পিনাংয়ে বাকতি তিমাহ হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন চিকিৎসক রিও নন্দ প্রতামা। তার বাগদত্তা একই জায়গায় হিসাব বিভাগে দায়িত্ব পালন করা ইনতান সিয়ারি।

২৯ অক্টোবর জাকার্তার একটি সম্মেলনে অংশগ্রহণ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন ডাক্তার রিও নন্দ প্রতমা। লায়ন এয়ারের জেটি৬১০ ফ্লাইটে পাঙ্কাল পিনাংযের দিকে যাচ্ছিলেন রিও। কিন্তু উড্ডয়নের ১৩ মিনিটের পরেই বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে ১৮৯ জন যাত্রীর মতো নিহত হন ডাক্তার রিও নন্দ প্রতমাও।চিরতরে ভেসে গেল নতুন একটা ঘর বাঁধার স্বপ্ন।

তবে প্রেমিকের শেষ ইচ্ছে পূরণ করতে সাদা রঙয়ের বিয়ের পোশাক ও সাদা হিজাবে সাজলেন প্রেমিকা ইনতান সিয়ারি। তার হাতে সাদা গোলাপও ছিল। তিনি জানান, জাকার্তায় একটা সম্মেলনে যাওয়ার আগে রসিকতা করে রিও তাকে বলেছিলো, ‘১১ নভেম্বরের মধ্যে আমি ফিরে না এলেও বিয়ের জন্য তৈরি হবে। যে বিয়ের পোশাক আমি তোমার জন্য পছন্দ করেছি সেটা পরবে। খুব সুন্দরভাবে সাজবে। শিলার (বিয়ের আয়োজক) কাছ থেকে তরতাজা সাদা গোলাপ চেয়ে নেবে। এটা হাতে নিয়ে ছবি তুলবে। এরপর আমাকে এসব ছবি পাঠিয়ে দেবে।’

ক্যাপশনে রিওকে উদ্দেশ্য করে ইনতান লিখেছেন, ‘আমার বিষণ্নতাগুলো বর্ণনা করার মতো নয়। তবে তোমার জন্য আমার মুখে হাসি আছে। আমি শোকাহত হবো না। আমাকে শক্ত থাকতে হবে, যেমনটা তুমি সবসময় বলতে।’

রিওর বোনের সঙ্গে তোলা একটি ছবি পোস্ট করে ইনতান লিখেছেন, ‘তুমি যদিও আমার পাশে নেই, তোমার বোন এখানে আছে। আমরা তোমার সুন্দর শেষ ইচ্ছে পূরণ করছি। জানি তুমি খুশি হচ্ছো।’

সিঙ্গাপুরের ইংরেজি দৈনিক দ্য স্ট্রেইটস টাইমসকে ইনতান বলেন, ‘ও (রিও) দারুণ একজন মানুষ ছিল। রোগীদের সবসময় সহযোগিতা করতে চাইতো। ওর কথা সবসময় মনে পড়ে।’

Leave a Reply