টেস্টবেড হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে অবসরে যাওয়া বোয়িং ৭৪৭

Share on Facebook

দীর্ঘদিন আকাশে উড়ার পর একটা
সময় বিমানকেও চলে যেতে হয় অবসরে। সাধারণত যেকোনো বিমান অবসরে গেলে শৈল্পিক স্থাপনা
হিসেবে জায়গা করে নেয় কোনো হোটেলে থেকে শুরু করে পানির নিচে কোনো স্থাপনা পর্যন্ত।
তবে এক্ষেত্রে একমাত্র ব্যতিক্রম হচ্ছে বোয়িং ৭৪৭।

তুলনামূলকভাবে দেখতে কম
আকর্ষনীয় হলেও বোয়িং ৭৪৭ টির জন্য অপেক্ষা করছে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। বিমানটি ভবিষ্যৎ
ইঞ্জিনের টেস্টবেড হিসেবে যুক্ত হচ্ছে বিখ্যাত রোলস-রয়েসের অ্যারোস্পেস অপারেশনে।

সর্বশেষ সিডনি থেকে লস
এঞ্জেলস বাণিজ্যিক ফ্লাইট পরিচালনার আগে বিমানটি ক্যান্টাস লিবারির হয়ে আকাশ ভ্রমণ
করেছে দীর্ঘ ২০ বছর। বর্তমানে সিয়াটলের পাশে অ্যারোটেক বিমান কেন্দ্রে রাখা আছে
অবসরে যাওয়া বিমানটি। এখানেই দুই বছরের সাধনায় প্রায় ৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ
করে টেস্টবেডে রূপান্তরিত করা হবে বিমানটিকে। যাতে রোলস-রয়েসের নতুন প্রজন্মের জেট
ইঞ্জিন তৈরীতে এটি সহযোগিতা করতে পারে।

বোয়িং ৭৪৭ বিমানটি বিগত ২০
বছরের বর্নাঢ্য জীবনে ক্যান্টাসের হয়ে পাড়ি দিয়েছে ৭০ মিলিয়ন কিলোমিটার। আর
সুনামের সাথে বহন করেছে প্রায় আড়াই মিলিয়ন যাত্রী। বিশ্বখ্যাত রোলস-রয়েসের বিদ্যমান
ফ্লায়িং টেস্টবেড বহরে সংযুক্ত হবে বিমানটি যেখানে আরো একটি বোয়িং ৭৪৭ বিমান
রয়েছে। যা ইতোমধ্যে ২৮৫টি ফ্লাইট ও পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে। বোয়িং ৭৪৭-এর কাঙ্ক্ষিত
পরিবর্তনের পর আল্ট্রাফ্যান ইঞ্জিনটি দেখতে কেমন হবে তার একটি পূর্ণচিত্র প্রকাশ
করা হয়েছে। যেখানে দেখানো হয়েছে বিমানের সাধারণ পাওয়ার ইউনিটের তুলনায় নতুন এই
আলট্রাফ্যান ইঞ্জিনটি বেশ বড়। এই বিষয়ে বিমান সংস্থাটি বলেছে,
আলট্রাফ্যান ইঞ্জিনটি তৈরীর পর থেকে জেট ইঞ্জিন জগতের সংজ্ঞাই
পাল্টে যাবে।

রোলস-রয়েসের বিপনন বিভাগের
প্রধান ক্যারোলিন ডে সিএনএনকে বলেন, আলট্রাফ্যান ইঞ্জিনটির পাখাগুলো আসলেই অনেক বড়, যেখানে XWB এর পাখাগুলোর ডায়ামিটার ১১৮ ইঞ্চি
সেখানে এই আলট্রাফ্যান ইঞ্জিনটির ১৪০ ইঞ্চি। এটা আসলেই অনেক বড়।

ইংল্যান্ডের ডার্বি শহরে
রোলস-রোয়েসের অ্যারোস্পেস কারখানায় পরিদর্শনকালে তিনি সিএনএন ট্র্যাভেলকে জানান
যে, তারা পরীক্ষামূলকভাবে
আরও বেশ কিছু সংখ্যক আল্ট্রাফ্যান ইঞ্জিন তৈরি করছে।

তিনি আরো নিশ্চিত করেন যে,
আগামী দশকের মধ্যেই আলট্রাফ্যান ইঞ্জিন তৈরীর কাজ সম্পন্ন করতে
শত শত লোক কাজ করে যাচ্ছে। এই নতুন ইঞ্জিনটিকে আরও জ্বালানী সাশ্রয়ী, নিরাপদ ও আকর্ষনীয় করে গড়ে তুলতে তারা দৃঢ়সংকল্প।

টেস্টবেড হিসেবে ব্যবহার হতে
যাওয়া সাবেক এই বিমানটিতে এমন কিছু আধুনিক যন্ত্রাদি সন্নিবেশ করা হবে যাতে সে
আকাশে উড়তে থাকা অবস্থাতেই কোনো ইঞ্জিনের কার্যক্ষমতার পরিমাপ করতে পারে।

অ্যারোটেকের প্রতিষ্ঠাতা ও
সভাপতি লি হিউম্যান বলেন, ভাসমান
এই পরীক্ষাগার নতুন ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে
পরিবেশগত ঝুঁকি হ্রাস করতে সক্ষম হবে। লি হিউ্ম্যান আরও বলেন, রোলস-রয়েসের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপদানের লক্ষে সিয়াটল এবং মূসা লেকে
আমাদের প্রকৌশল, নকশা ও পরীক্ষকদল কঠোর সাধনা করে যাচ্ছে।

Leave a Reply