ঘুরে আসুন ইদ্রাকপুর দুর্গ থেকে

Share on Facebook

প্রায় ৩৬০ বছরের বেশি
পুরনো স্থাপনাটি মূলত একটি জলদুর্গ। ২০০৩ সালে প্রকাশিত ‘মুন্সীগঞ্জের ইতিহাস’
গ্রন্থের তথ্যানুযায়ী, বারভূঁইয়াদের দমন ও জলদস্যুদের
কবল থেকে ঢাকাকে রক্ষার জন্য তৈরি হয় ইদ্রাকপুর দুর্গ। ইটের এই স্থাপনা থেকে প্রায়
আধা কিলোমিটার দূরে ইদ্রাকপুর নামে একটি এলাকা আছে।

ইদ্রাকপুর দুর্গটি
আয়তকার। এটি উত্তর-দক্ষিণ দিকে প্রসারিত। এর দৈর্ঘ্য ৮৬ দশমিক ৮৭ মিটার ও প্রস্থ
৫৯ দশমিক ৬০ মিটার। দুর্গের পশ্চিমাংশের চার কোণে ছোট ড্রাম আকৃতির চারটি বুরুজ
রয়েছে। দুর্গে বিশাল উঁচু গোলাকার দেয়ালগুলো ড্রাম হিসেবে পরিচিত। দেয়ালের গায়ে গোলা ছোড়ার উপযোগী কৌণিক ফোকর আছে।

ড্রামের পাদদেশে
ভূগর্ভস্থ একটি কুঠুরি ও কুঠুরিতে অবতরণের জন্য নির্মিত সিঁড়ি দেখা যায়। জনশ্রুতি
আছে, এটি
ছিল গোপন সুড়ঙ্গপথের অংশ। এর মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ একটি গোপন কক্ষ তথা নিরাপদ
আশ্রয়স্থলে যাওয়া যেতো। এতে অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ মজুত রাখা হতো।

১৮৫৭ সালে ইংরেজদের
নিয়ন্ত্রণে চলে যায় ইদ্রাকপুর দুর্গ। ২০১৪ সালে প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর এই কেল্লা
সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। তাদের উদ্যোগে খনন কর্মসূচির ফলে ইদ্রাকপুর দুর্গে মোগল
আমলে নির্মিত মেঝে, পানি নিষ্কাশনের নালা ও অস্ত্রাগার উন্মোচিত হয়েছে। এছাড়া পাওয়া গেছে
গুপ্ত, পাল ও সেন আমলে ব্যবহৃত বিভিন্ন তৈজসপত্র ও
চুন-সুড়কি।

দুর্গ সংস্কারের সময়
ব্রিটিশ আমলে নির্মিত কাঠামোগুলোর মধ্যে মেঝে নির্মাণের বিশেষ কৌশল হিসেবে
সারিবদ্ধ কলসের ওপর বর্গাকার টালি ও ইট বসানো অবস্থায় পাওয়া যায়। ধারণা করা হয়, আর্দ্রতারোধক হিসেবে
এই কৌশল ব্যবহার করা হতো।

দুর্গে প্রবেশের ফটক
দিয়ে ভেতরে যাওয়া মাত্রই দেখা যায় বিশাল আকৃতির একটি পুকুর, এর চারপাশে বাঁশের
বাঁধ দেওয়া। পুকুরের দু’পাশে নতুনভাবে ঘাট বাঁধানো হয়েছে।
ফলে দর্শনার্থীরা চাইলে হাত-মুখ ধুয়ে নিতে পারেন।

যেভাবে যাবেন-
মুন্সীগঞ্জ সদরের কাছে পুরনো কোর্ট অফিস সংলগ্ন মুক্তারপুর থেকে অটোরিকশায় বা রিকশাযোগে ইন্দ্রাকপুর কেল্লায় যাওয়া যায়। ভাড়া পড়বে ১০-২৫ টাকা। এছাড়া মাইক্রো অথবা প্রাইভেট কার নিয়েও ঘুরতে যেতে পারেন দর্শনীয় এই স্থানে।

Leave a Reply